জানা গিয়েছে, রাজস্থানের যোধপুর-জয়সলমের হাইওয়েতে কে কে ট্রাভেলসের ওই এসি স্লিপার বাসে আগুন লেগে ২০ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। বাসটিতে ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন, যাঁদের মধ্যে ১৬ জন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন এবং যোধপুরের মহাত্মা গান্ধি হাসপাতাল (এমজিএইচ) এবং এমডিএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: চিনের চর…২০ বছর ধরে বসেছিল আমেরিকায়! ভারতীয় স্কলারকে এবার গ্রেফতার করল ট্রাম্প সরকার
advertisement
জানা গিয়েছে, বাসটিতে শর্ট সার্কিট হয়েই প্রাথমিক ভাবে আগুন লেগেছিল৷ কিন্তু, তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এসি গ্যাস লিক ও বাসের ট্রাঙ্কে বেআইনি ভাবে মজুত আতশবাজির জন্য৷ শর্ট সার্কিটের আগুনকে মুহূর্তেই আগ্রাসী করে তোলে ওই আতশবাজি৷
এছাড়া, মাত্রা দিন পাঁচেক আগেই এই রুটে স্লিপার বাস চালু করেছিল ওই বাস সংস্থা৷ একটি বাসের ইন্টেরিয়ার চেঞ্জ করে এসি-র অস্থায়ী ব্যবস্থা স্লিপার কোচ তৈরি করা হয়েছিল কোনও অনুমোদন ছাড়াই৷ ইন্টেরিয়ারে বিপুল ভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল দাহ্য বস্তু৷ এসি কোচের কারণে মোটা কাচের জানলা এবং ভিতরে দাহ্য বস্তুর উপস্থিতি আগুন দ্রুত ছড়িয়ে দেয় বাসের ভিতরে৷ তাছাড়া, বাসের ভিতরে সরু প্যাসেজও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷
তবে সবচেয়ে খারাপ জিনিস ছিল বাসের স্বয়ংক্রিয় দরজা৷ এটিই ছিল বাস থেকে বেরনোর একমাত্র রাস্তা৷ অথচ, আগুনের জন্য বাসের ভিতরের সমস্ত ওয়ারিং নষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ তাই স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ‘লক’ হয়ে গিয়েছিল বাসটির একমাত্র দরজা৷ অনেক যাত্রী কোনও রকমে বাসের জানলা ভাঙতে পারলেও বেশির ভাগই বাসের ভিতরে আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে যান৷
বাসের ফাইবার বডি, সিটের পর্দা, অস্থায়ী এসি সিস্টেম এবং একটি সরু করিডোরের কারণে আগুন দ্রুত পুরো গাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন পুরো বাসটিকে গ্রাস করে ফেলে, যার ফলে যাত্রীরা পালাতে পারেননি। এই দুর্ঘটনা আবারও স্লিপার বাসগুলিতে এমারজেন্সি এক্সিট এবং সুরক্ষা মানদণ্ডের অভাবের কথা প্রমাণ করে৷
- এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা স্থানীয় সরকারের পরিবহন বিভাগ এবং বাস মালিকের চূড়ান্ত অবহেলা প্রমাণ করে। এই দুর্ঘটনা বেশ কয়েকটি গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে:
- অবৈধ পরিবর্তন: কেন প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা অনুমোদন ছাড়াই একটা সাধারণ বাসকে এসি স্লিপার বাসে পরিবর্তন করা হয়েছিল?
- বিপজ্জনক পণ্য: বাসের ট্রাঙ্কে আতশবাজির মতো দাহ্য পদার্থ কীভাবে ছিল? এটি যাত্রী সুরক্ষা নিয়মের চরম লঙ্ঘন।
- নিরাপত্তার মানদণ্ড: বাসটিতে কেন জরুরি বহির্গমন পথ ছিল না এবং শুধুমাত্র একটি প্রধান ফটক ছিল না?