কিন্তু এই ভারতেই এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে মোবাইল টাওয়ার বসানোর নিয়ম নেই। উল্লঙ্ঘন করলে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।ছত্তিসগঢ়ে রয়েছে এমন একটি গ্রাম। সেখানে মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ থেকে পাখিদের রক্ষা করতে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই গ্রামে যারা পাখিদের ক্ষতি করে তাদের শাস্তি হিসেবে গ্রামবাসীরা জরিমানা করেন।
আরও পড়ুনঃ পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার দায় কার? মদন মিত্রের বিস্ফোরক দাবিতে তোলপাড়
advertisement
যে পৃথিবীতে মানুষ প্রতিনিয়ত মোবাইল এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত থাকতে চায়, সেখানে কিছু মানুষ এখনও আছেন যাঁরা পাখির স্বার্থে এই আধুনিকতা থেকে দূরে থাকতে চান। ছত্তিসগঢ়ের গারিয়াবন্দ জেলার লাচকেরার বাসিন্দারা নিজেরাই এই নিয়ম চালু করেছেন। তাঁদের বাসস্থানের আশেপাশে কোনও মোবাইল টাওয়ার বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি এখানে। তাঁরা ভয় পান যদি কোনও ভাবে এই টাওয়ার থেকে নির্গত বিকিরণ এশিয়ান ওপেনবিল স্টর্ক বার্ডকে প্রভাবিত করবে।
আসলে এই পাখিগুলি পরিযায়ী। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে এই এলাকায় আসে। ওই গ্রামে প্রায় ৬০০ পরিবার বাস। তারা প্রত্যেকেই একমত যে মোবাইল টাওয়ার থেকে এই পাখিদের জীবন, প্রজনন এবং চলাফেরা ও উড়ার ক্ষমতা প্রভাবিত হতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই তাঁরা নিয়ম তৈরি করেছেন।
আরও পড়ুনঃ অবাক করে দিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ! তাঁর আজকের কাজে গর্বিত সমুদ্রগড়
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উদয় নিষাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গাছে বাসা বাঁধতে গিয়ে নিরিবিলি জায়গা খোঁজে পাখিরা। ওদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর দিতে চান এলাকার বাসিন্দারা। তাতে যদি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হয়, তাতেও ক্ষতি নেই। এই ওপেনবিল স্টর্কদের প্রতি গ্রামবাসীদের ভালবাসা দেখার মতো।
শুধু মুখের কথা নয়, লাচকেরার গ্রাম পঞ্চায়েত একটি প্রস্তাব পাস করিয়ে ফেলেছে। সেই অনুযায়ী কোনও সংস্থা ওই গ্রামের সীমানা এলাকার মধ্যে মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করতে পারবে না। এর বাইরে ওই গ্রামে পাখিদের কোনও ভাবে বিরক্ত করলে বা ক্ষতি করতে চাইলে, তাকে ১০০০ টাকা জরিমানাও করেন বাসিন্দারা।
বর্ষাকালে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি লাচকেরায় আসতে থাকে। এই যাতায়াত চলতে থাকে দীপাবলি পর্যন্ত। ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপক ভাবে পাওয়া যায় এই পাখি। চকচকে কালো ডানা এবং লেজ-সহ বাদামি বা সাদা রঙের পাখিগুলি নিশ্চিন্তে আসে এই গ্রামে। জলঢোঁরা সাপ, ব্যাঙ এবং বড় পোকামাকড় খেয়েই বাঁচে এরা।