সেই হিসেবে দেখলে ভারত এবার রাশিয়ায় নির্মিত তার দ্বিতীয় শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ পেতে চলেছে। বন্দুক এবং সেন্সর-সহ সজ্জিত এই আইএনএস তমালকে আইএনএস তুশিলের উত্তরসূরী বলাই যায়, যা গত বছরের ডিসেম্বরে কমিশন করা হয়েছিল।
advertisement
পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে আরব সাগরে ভারত তার নৌবাহিনীর শক্তি প্রদর্শন করেছে সফলভাবে। এছাড়া, নৌবাহিনী এবং ডিআরডিও সোমবার শত্রু সাবমেরিন এবং যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করার জন্য দেশীয়ভাবে তৈরি এক মাল্টি-ইনফ্লুয়েন্স গ্রাউন্ড মাইন সফলভাবে নিক্ষেপ করেছে জলের নীচে, যদিও কম বিস্ফোরক ব্যবহার করে তা করা হয়েছে। ‘‘এই ব্যবস্থা ভারতীয় নৌবাহিনীর সমুদ্রতলের যুদ্ধক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে’’, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন।
নতুন ৩,৯০০ টনের আইএনএস তমাল রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদে ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে চারটি উন্নত Krivak-III শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজের একটি আমব্রেলা ডিল স্বাক্ষর করে, যার মধ্যে প্রথম দুটি প্রায় ৮,০০০ কোটি টাকায় কেনা হয়েছিল। অন্য দুটি, ত্রিপুট (Triput) এবং তবস্যা (Tavasya), গোয়া শিপইয়ার্ডে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে, যার মোট ব্যয় প্রায় ১৩,০০০ কোটি টাকা।
এই যুদ্ধজাহাজগুলো বিস্তৃত পরিসরে অত্যাধুনিক অস্ত্রব্যবস্থা দিয়ে সজ্জিত এবং নৌযুদ্ধের চারটি মাত্রা, বায়ু, জলপৃষ্ঠ, জলতলপৃষ্ঠ এবং তড়িৎ চৌম্বকীয় ক্ষেত্র জুড়ে সমুদ্র অভিযানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
এই অস্ত্রের মধ্যে অবশ্যই রয়েছে BrahMos সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যার আক্রমণ পরিসর ২৯০ থেকে ৪৫০ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘ পাল্লার উল্লম্বভাবে উৎক্ষেপণযোগ্য, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং সাবমেরিন-বিধ্বংসী টর্পেডো এবং রকেটও আছে। নতুন এই রণতরীতে ব্রহ্মস ছাড়াও রয়েছে টর্পেডো বহনের ক্ষমতা, যা অচিরেই যে কোনও ডুবোজাহাজকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এ ছাড়া জাহাজে হেলিকপ্টার ওঠানামার ব্যবস্থাও থাকছে। গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন যুদ্ধসরঞ্জাম ভারতেই তৈরি করায় গুরুত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী দিনে এর পরিধি আরও বিস্তৃত করার ভাবনা রয়েছে কেন্দ্রের। সূত্রের খবর, ‘তমাল’ই ভিন্ দেশ থেকে ভারতে আনা শেষ রণতরী হতে চলেছে।
এই যুদ্ধ জাহাজ ৩০ নটেরও বেশি গতিতে চলতে পারে। বহন করে পারে আপডেটেড অ্যান্টি-সাবমেরিন এবং এয়ারবোর্ন আর্লি ওয়ার্নিং হেলিকপ্টার, কামোভ-২৮ এবং কামোভ-৩১। ‘‘রেডিও, ইনফ্রারেড এবং অ্যাকোস্টিক স্পেকট্রাম জুড়ে উচ্চ মাত্রার অটোমেশন এবং স্টিলথ ফিচার এর যুদ্ধ ক্ষমতা এবং টিকে থাকার ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করে’’, এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।