লেভেলে শালুক-পদ্ম বনে বসে থাকা ময়ূর আর হরফে নাগরী ছাপ— দীপাবলির বিশেষ সংগ্রহ। এসবের সঙ্গে বিশেষ স্বাদ, ভারতকে এনে দিয়েছে সেরার স্বীকৃতি।
গত অগাস্টে সেরার শিরোপা মাথায় পরেছে ভারতীয় সিঙ্গল মল্ট ব্র্যান্ড ইন্দ্রি। ২০২৩ সালের ‘হুইস্কিস অফ দি ওয়র্ল্ড অ্যাওয়ার্ড’-এ ‘বেস্ট ইন শো ডবল গোল্ড’ পুরস্কার পেয়েছে ভারতের এই নিজস্ব হুইস্কি ব্র্যান্ড।
advertisement
আরও পড়ুনLuxury Bus Stolen: গোটা লাক্সারি বাস চুরি, জ্যামে আটকে ধরা পড়ল চোর!
একটা সময় ছিল যখন কাঠের পিপেতে ভরে রেখে দেওয়া হত ওয়াইন ও বোর্বন। বিদেশী সেই সব দামি মদ যত পুরনো হয়, ততই বাড়ে তার কদর। ঠিক সেই রকমই স্বাদ নিয়ে এসেছে ভারতের নতুন ব্র্যান্ড ইন্দ্রি। ভারতীয় ঐতিহ্যে তামার পাত্রে তৈরি হয় ইন্দ্রি। থাকে শুকনো ফল, বাদাম, মশলা, ওক, বিটারসুইট চকোলেট। ট্রিপল-এজিং হুইস্কি ইন্দ্রি তিনটি ভিন্ন ধরনের পাত্রে রেখে মজানো হয়। তাতে ফল, মশলা ও বাদাম অন্য মাত্রা তৈরি করে স্বাদে। ২০২১ সালে এই ব্র্যান্ডের পথ চলা শুরু। দু’বছরের মধ্যেই বিশ্বের তাবড় ব্র্যান্ডকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।
সাধারণত এশীয় বাজারে বিয়ারের চাহিদাই বেশি। ব্যতিক্রমী ভাবে ভারতে হুইস্কি জনপ্রিয়। এবার হুইস্কি উৎপাদক তালিকাতেও নাম তুলছে ভারত। এদেশের স্পিরিটের বাজারে প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলারের স্বপ্ন দেখাচ্ছে ইন্দ্রি।
আরও পড়ুনNose Bleeding in Winter: শীতে নাক দিয়ে ঝরঝর করে রক্ত পড়ছে? এখনি সতর্ক না হলে মহাবিপদ
ফ্রান্সের Pernod Ricard উৎপাদিত গ্লেনলিভেট হা ব্রি33eব্র্যান্ডের পথ চলা শুরু। সেই সময় স্পিরিটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলেই ভারতের হুইস্কি মানচিত্রে একটা বড় বদল এনেছে, এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অনেক ভারতীয়ই বলছেন আগে তাঁরা বিদেশী ব্র্যান্ড পান, কিন্তু এখন ইন্দ্রিতে মজেছেন। স্বাদের পাশাপাশি একটা স্বাজাত্যবোধও কাজ করে।
ইন্দ্রির বিশেষ বিভাগ, ৪২১ ডলার মূল্যের ‘দিওয়ালি কালেক্টরস’ গত অগাস্ট মাসে সানফ্রান্সিসকোতে ‘হুইস্কি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাওয়ার্ডস’-এর ব্লাইন্ড টেস্টিং-এ সেরার সেরা নির্বাচিত হয়েছে। সেখানে ভারতীয় ব্র্যান্ডটি পিছনে ফেলে দিয়েছে স্কটিশ, মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের। এর ফলে এতদিন সারা বিশ্বের নজর যেখানে কেন্দ্রীভূত ছিল স্কটল্যান্ডের দিকে, এখন তা ঘুরে যাচ্ছে ভারতের দিকে।
সম্প্রতি Pernod Ricard তার প্রথম ভারতে তৈরি সিঙ্গল মল্ট Longitude 77-এর উদ্বোধন করেছে, এর দাম ৪৮ ডলার। সংস্থা চাইছে দুবই এবং গোটা বিশ্বে এই বিশেষ সিঙ্গল মল্টের বিক্রি বাড়াতে।
তবে এই প্রথম নয়। Pernod-এর প্রতিদ্বন্দ্বী Diageo গত বছরই তার প্রথম ভারতীয় সিঙ্গল মল্ট গোদাওয়ান চালু করেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ পাঁচটি দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে গোদাওয়ান।
Pernod-এর উৎপাদিত গ্লেনলিভেটের বিক্রি দীর্ঘদিন ধরেই সর্বোচ্চ। গত বছর ৩৯ শতাংশ বৃদ্ধিও পেয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় ব্র্যান্ড Amrut-এর বিক্রি হঠাৎই ১৮৩ শতাংশ বেড়ে যায়।
২০২১-২২ সালে ভারতীয় সিঙ্গল মল্টের বিক্রি বেড়েছে ১৪৪ শতাংশ। পানীয় বাজার IWSR-র ডেটা বিশ্লেষণ থেকে উঠে এসেছে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয় মল্টের ব্যবহার স্কচের তুলনায় বছরে ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
ইন্দ্রির উৎপাদক Piccadily Distilleries-র প্রতিষ্টাতা সিদ্ধার্থ শর্মা দাবি করেছেন, ২০২৫ সাল নাগাদ তাদের ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি হবে। ২০ হাজার লিটার (৫,৩০০ গ্যালন) উৎপাদন সম্ভব। বিশ্বের ১৮টি বাজারে তাঁরা পৌঁছে যাবেন।