গত সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে বৈঠক করেন জোটের প্রতিনিধিরা। আর সেখানে কার্যত সবাই একপ্রকার নিশ্চিত হয়েছেন, মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমে সময় নষ্ট করা মোটেই উচিত নয়। তাই দ্রুত লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়তে হবে। জোর দিতে হবে প্রচারে। সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকের শুরুতেই সময় নষ্ট না করার বার্তা দেন। আর তাতেই কার্যত সিলমোহর দেন বাকিরা।
advertisement
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরেই বিদেশ যাচ্ছেন মমতা! মিলল কেন্দ্রের অনুমতি, এবার গন্তব্য দুবাই এবং স্পেন
তবে অতি দ্রুত রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করে ময়দানে নেমে পড়ার পিছনে আরও একটা কারণও রয়েছে। সামনেই রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড় সহ একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। আর সেখানেই INDIA জোটের আসল অ্যাসিড টেস্ট। ইন্ডিয়া জোট বিজেপি-র বিকল্প হিসাবে মানুষের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হতে চলেছে, এই রাজ্যগুলির বিধানসভা ভোটের ফলাফল তার অনেকটাই ইঙ্গিত দেবে৷
সেই জন্যই সেক্ষেত্রে যথাসম্ভব একের বিরুদ্ধে এক লড়াই করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। এদিনের বৈঠকে যে যে বিষয় উল্লেখযোগ্য হতে চলেছে তা হল, কলেবরে বৃদ্ধি পেয়েছে INDIA, ২৬ রাজনৈতিক দলের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮। আগামী অধিবেশনে আরও ৬-৭ রাজনৈতিক দল যোগ দিতে চায় জোটে৷ কৌশলগত কারণে ধীরে ধীরে তাদের যোগ দেওয়ানো হবে বলে সূত্রের খবর৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শিরোমণি অকালি দল।
এছাড়া, তৈরি হচ্ছে সমম্বয় কমিটি়। যেখানে ১১ জন সদস্য থাকবেন৷ এই কমিটির আহ্বায়ক হতে পারেন একাধিক জন। এর মধ্যে এগিয়ে নীতীশ কুমার ও শরদ পওয়ার। INDIA জোট গঠন করতে চলেছে একটি প্রচার কমিটিও। এদিন তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হওয়ার কথা। এই কমিটিতে যুবদের বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
ইতিমধ্যেই বেকারত্ব, বিভাজনের রাজনীতি ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছে দলগুলি। প্রচারে এগুলির উপরেই বেশি জোর দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। INDIA জোটের নামকরণ হয় বেঙ্গালুরুয়। এবার মুম্বইয়ে হবে লোগো প্রকাশ। সেই লোগোর মূল থিম হতে চলেছে দেশপ্রেম, একতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা৷ লোগোর রূপরেখা ইতিমধ্যেই তৈরি। তাতেই পড়বে সিলমোহর।
লোকসভা ভোট ২০২৪ পাখির চোখ হলেও। আগামী ডিসেম্বরে ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোট। এই ভোটে আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে জোট নিয়ে সমস্যা রয়ে গিয়েছে এখনও৷ আর এই সমস্যা দূর করে, একজোট হয়ে যতটা বেশি সংখ্যক আসনে এক হয়ে লড়াই করা যায়, সেটাই আপাতত লক্ষ্য ইন্ডিয়ার। বিধানসভা ভোটে ইন্ডিয়া জোটের প্রচার কৌশলেও জোর দিতে চলেছেন মমতা-নীতীশেরা৷ আসন্ন বিধানসভাগুলির জন্য তৈরি হবে মুখপাত্রদের পৃথক তালিকা। এখানেও তরুণ প্রজন্মকে সামনে আনার ভাবনা।
বাংলা, দিল্লি, কেরলের মতো রাজ্যে শরিক দলের মধ্যে যে দূরত্ব এখনও রয়েছে তা-ও মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন ইন্ডিয়া নেতৃত্ব৷ দূরত্ব কমাতে আলাদা রাজ্যে উপকমিটি গঠন হতে পারে৷ একের বিরুদ্ধে নীতি হবে রাজ্য ভিত্তিক ফর্মূলা। সামনে সংসদের অধিবেশন৷ INDIA মনে করছে এই অধিবেশন আসলে মোদির ভোট এগোনোর কৌশল। যা নিয়ে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। তাতে সহমত হয়েছিলেন রাহুল গান্ধিও। ফলে ভোটে যাওয়ার প্রস্তুতি যাতে থাকে সেই আলোচনাও শুরু হচ্ছে।