এই কাহিনী নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে বৈকী! শ্রীনাথ, কেরলের এর্নাকুলম রেলস্টেশনে কাজ করতেন। কিন্তু আয় তেমন ভাল ছিল না। এদিকে তাঁর ঘর আলো করে এসেছে ছোট্ট মেয়ে। সেই মেয়েকে একটা সুন্দর, সুস্থ আর স্বচ্ছল জীবন দিতে চান শ্রীনাথ। কীভাবে মেয়ের জীবন আরও সুন্দর করে তোলা যায় সেই ভাবনাই কাজ করত মাথায়। সেই ভাবনা থেকেই বদলে গেল শ্রীনাথের জীবন।
advertisement
কঠোর পরিশ্রম আর একান্ত ইচ্ছাশক্তির জোরে, অন্য লোকের মোট বয়ে দেওয়া কুলি শ্রীনাথ হয়ে গেলেন IAS আধিকারিক। রূপকথার মতো শোনালেও এই গল্প একেবারেই সত্যি।
জানা গিয়েছে, শ্রীনাথ কেরলের মুন্নারের বাসিন্দা। প্রথম জীবনে ভাল চাকরি না পেয়ে কুলির কাজই করতে শুরু করেন। কিন্তু আদরের মেয়ের যত্ন ঠিক মতো করতে পারছেন না, এই চিন্তা শ্রীনাথকে কুড়ে কুড়ে খেত।
বাবার আয় এত কম হলে মেয়ের ভবিষ্যতের পথও যে সুগম হবে না। জীবনের সঙ্গে একই রকম আপোস করতে হবে তাঁর মেয়েকেও। এই ভাবনা থেকেই অন্য কিছু করার কথা ভাবতে শুরু করেন শ্রীনাথ। কুলির কাজ করার পাশাপাশিই শুরু করেন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে।
কিন্তু আয় যে সামান্য। সংসার চালানোই যেখানে মুশকিল সেখানে UPSC কোচিং পাবেন কোথায়! তাই, নিজে নিজেই পড়াশোনা করতে শুরু করেন তিনি। সেখানেও বাধা। প্রয়োজনীয় সমস্ত বই কেনা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেই যে সব করা যায়, তারই দৃষ্টান্ত শ্রীনাথ।
কুলির কাজ করতেন বলে সারাদিনই থাকতে হত রেলস্টেশনে। আর সেখানেই পাওয়া যায় WiFi-এর সুবিধা, বিনামূল্যে। ইন্টারনেট ব্যবহার করেই শুরু হয় পড়াশোনা।
আরও পড়ুন: ১৫ অক্টোবর থেকে শুরু বাংলার প্রথম AC ফার্স্ট ক্লাস লোকাল ট্রেন! ভাড়া শুনলে চোখ কপালে উঠবে
প্রথমে শ্রীনাথ কেরল পাবলিক সার্ভিস কমিশনে সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুত হন। নিজের কানে ইয়ারফোন গুঁজে পড়াশোনা করতেন। সেবার সফল ভাবে উত্তীর্ণ হন কেরল পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষা। আর তাতেই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তাই শুরু করে দেন UPSC-র প্রস্তুতি। তবে সাফল্য আসেনি। প্রথমে তিনবার ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তবু হার মানেননি। আত্মবিশ্বাস বজায় রেখে ফের বসেছেন পরীক্ষায়। চতুর্থবার সফল হয়েছেন তিনি। অবশেষে কুলি শ্রীনাথ হয়েছেন IAS।