পেশায় পরিবহণ ব্যবসায়ী এই যুবক এবং তাঁর স্ত্রীকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল গত ২৩ মে৷ গুয়াহাটি হয়ে শিলঙে পৌঁছেছিলেন ওই দম্পতি৷ তার পর একটি স্কুটার ভাড়া করে রওনা দিয়েছিলেন ৬০ কিলোমিটার দূরে চেরাপুঞ্জির সোহরা-য়৷ পর দিন তাঁদের ভাড়া করা স্কুটার পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল স্থানীয় গ্রাম সোহরারিমের কাছে৷ পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে দু’জনের ব্যাগও৷
advertisement
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে গত ১১ মে রাজকীয় অনুষ্ঠানে বিয়ে করেন এই জুটি৷ তাঁদের মধুচন্দ্রিমা শুরু হয় ২০ মে৷ শিলঙে পৌঁছনর আগে গুয়াহাটির মা কামাখ্যা মন্দিরে পুজোও দেন এই দম্পতি৷ যুবকের মা রীনা রঘুবংশী জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে ছেলে এবং পুত্রবধূর কথা হয়েছিল গত ২৩ মে৷ এর পর আর কোনও যোগাযোগ হয়নি তাঁদের৷ ব্যবসায়ী এবং তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে বার বার ফোন করেও মেলেনি উত্তর৷ গত ২৪ মে থেকে তাঁদের দু’জনের মোবাইল বন্ধ৷ এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীর পরিজনরা প্রথমে ভেবেছিলেন যে নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্যই মোবাইলে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না৷ পরে তাঁদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে৷ এর পরই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন৷
সোহরার পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকার জঙ্গল, পাহাড়ের ঢাল, চড়াই, উতরাই সন্ধান করা হচ্ছে তন্নতন্ন করে৷ ঘন বন, গভীর খাদ এবং তীক্ষ্ণ ঢালের জন্য তল্লাশি পর্বে সমস্যা হচ্ছে৷ নিখোঁজ দম্পতির লাস্ট লোকেশন ছিল শিলঙের ওসরা পাহাড়৷ অত্যন্ত স্পর্শকাতর বলে পরিচিত এই এলাকায় একটি পাহাড়ি ঝোরার পাশে৷ কাছের একটি রিসর্ট অনেক দিন ধরেই অপরাধমূলক কাজের ডেরা বলে পরিচিত৷ সেটিকেও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে৷
নিখোঁজ যুবকের আত্মীয়রা ইনদওর থেকে পৌঁছেছেন মেঘালয়ে৷ তাঁরা পুলিশকে সহযোগিতা করছেন তল্লাশিতে৷ স্থানীয় পর্যটন এজেন্সিতে যোগাযোগ করা হচ্ছে৷ সেখান থেকে জানানো হয়েছে ওই স্কুটার ভাড়া করে ওসরা পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন দম্পতি৷ অপরাধমূলক কাজের জন্য বিতর্কিত ওই রিসর্টে তাঁরা গিয়েছিলেন বা ছিলেন কিনা, দেখা হচ্ছে৷
প্রসঙ্গত এপ্রিল মাসে হাঙ্গেরির পর্যটক পুসকাস সোল্ট নিখোঁজ হয়ে যান মেঘালয়ে৷ নিখোঁজ হওয়ার ১২ দিন পর রামদাইত গ্রামের কাছে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়৷ পুলিশের দাবি, তিনি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন৷ এই রহস্যমৃত্যুর পর পূর্ব খাসি পাহাড়ে কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে৷ পর্যটকদের কাছে আবেদন করা হয়েছে স্থানীয় গাইড ছাড়া পাহাড়ি জঙ্গল, পাহাড়ের ঢাল, নির্জন পাহাড়ি পাকদণ্ডীতে একা একা না যেতে৷