সরকারের মতে, আসবাহ আরজুমন্দ খানকে বরখাস্ত করা হয়েছে কারণ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনের তদন্তের সময় প্রকাশ্যে আসে যে তিনি একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী ছিলেন যার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের গভীর সম্পর্ক ছিল।
আরও পড়ুন- সরকারি চাকরি পেতে 'মেয়েদের কারও সঙ্গে শুতে হয়'!কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে তোলপাড় দেশ
advertisement
“তিনি কারাতের বিচারের সময় আলোচনায় আসেন। আসাবাহ প্রথম ২০০৩ সালে শের-ই কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে চাকরি পেয়েছিলেন। পিছনের দরজা দিয়ে তাঁর নিয়োগ হয় এবং এতে প্রশাসনেরই কেউ জড়িত ছিল বলে মনে হচ্ছে,” বলেন জম্মু কাশ্মীরের এক প্রশাসননিক কর্মকর্তা। তাঁর মতে, ২০০৩ থেকে ২০০৭ এর মধ্যে তিনি কয়েক মাস ধরেই কাজে আসেননি কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অবশেষে, ২০০৭ সালের অগাস্টে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। “যখন তিনি কাজে আসেননি, তখন তিনি জার্মানি, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, হেলসিঙ্কি, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড সফর করেছিলেন,” বলেন ওই কর্মকর্তা।
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, তিনি জেকেএলএফ-এর বার্তাবহ হিসেবে কাজ করতেন। “বেশিরভাগ সফরের সময় তিনি বিভিন্ন বিমানবন্দরের বিমানে রওনা হতেন কিন্তু নেপাল বা বাংলাদেশ থেকে সড়ক পথে ভারতে ফিরে আসতেন,” বলেন তদন্তের একজন কর্মকর্তা। আসবাহ আরজুমন্দ খান ২০১১ সালে জেকেএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং কয়েক মাসের মধ্যে বিট্টা কারাতেকে বিয়ে করেন।
জম্মু কাশ্মীর প্রশাসনের তালিকা অনুসারে, মুহিত আহমেদ ভাট কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের একজন বিজ্ঞানী৷ “মুহিত ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (KUTA) একজন কার্যনির্বাহী সদস্য এবং সভাপতি ছিলেন। ২০১৬ সালে ছাত্র বিক্ষোভ এবং রাস্তায় বিক্ষোভ সংগঠিত করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন মুহিত। ওই বিক্ষোভে অনেক তরুণ মারা গিয়েছিলেন,” বলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন- বন্দেমাতরম লেখা, পদ্ম আঁকা পতাকা বিবর্তিত হয়েই আজকের জাতীয় পতাকা, জানুন ইতিহাস!
তাঁর মতে, KUTA-র একজন সদস্য মুহিত আহমেদ ভাট পাথর ছোড়ায় নিযুক্ত এবং সন্ত্রাসবাদীদের কিছু পরিবারকে KUTA-র তহবিল থেকে টাকা দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তিনি লস্কর-ই-তৈবা সন্ত্রাসবাদীদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন।
মজিদ হুসেন কাদরিকে এলইটি-এর একজন কট্টর সন্ত্রাসবাদী বলে জানিয়েছে তদন্তকারী দল। “কাদরি যখন ২০০১ সালে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএর ছাত্র ছিলেন, তখন তিনি ২০০১ সালের অগাস্টে দুই পাকিস্তানি এলইটি সন্ত্রাসবাদীর সংস্পর্শে এসেছিলেন এবং কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের এলইটি পয়েন্ট-পার্সন হয়েছিলেন। সন্ত্রাসবাদীদের জন্য অস্ত্র পাঠানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ২০০৩ সালে তাঁকে এলইটির মুখপাত্রের পদ দেওয়া হয়। তাঁর কাছ থেকে একটি স্নাইপার রাইফেলও উদ্ধার করা হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীর জননিরাপত্তা আইনের অধীনে দুই বছরের জন্য আটক ছিলেন কাদরি, পরে আদালত তাঁকে মুক্তি দেয়।
হিজবুল মুজাহিদিনের স্বঘোষিত সুপ্রিম কমান্ডারের ছেলে সৈয়দ আবদুল মুয়েদকেও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি জেকেডিআইতে আইটি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে, সৈয়দ আবদুল মুয়েদকে চুক্তির ভিত্তিতে আইটি পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। সূত্রের খবর, নিয়োগ নিয়ম লঙ্ঘন করেই করা হয়। তাঁর চুক্তিভিত্তিক পদটি পরবর্তীকালে স্থায়ী পদে রূপান্তরিত হয়। সালাহউদ্দিনের অন্য দুই ছেলে আহমেদ শাকিল এবং শাহিদ ইউসুফও সরকারি চাকরি করত, পরে তাঁদেরও বরখাস্ত করা হয়েছিল।