এই বছর পালিঘাট এলাকায় ২৫টিরও বেশি সক্রিয় বাসা চিহ্নিত করা হয়েছে, যার প্রতিটিতে স্ত্রী কুমির ৩০ থেকে ৫০টি করে ডিম পাড়ছে। এখনও পর্যন্ত ৬টি বাসা থেকে প্রায় ১৫০টি বাচ্চা কুমির ডিম থেকে বেরিয়ে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে যে এই সংখ্যা শীঘ্রই ২০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই সংখ্যাটি আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
advertisement
এই সংবেদনশীল প্রজনন স্থানে বন বিভাগের কর্মচারী এবং বিশেষজ্ঞদের ২৪×৭ টহল চলছে। বাসাগুলির চারপাশে তারের বেড়া দেওয়া হয়েছে এবং ক্যামেরা এবং জৈব-লগিং সরঞ্জামের মাধ্যমে প্রতিটি কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। রাজ্যে বর্ষা প্রবেশ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে চম্বলের তীব্র স্রোতে ভেসে যাওয়ার আগে এই শাবকদের একটি নতুন হ্যাচারিতে পাঠানোর জন্য বন বিভাগ বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে। বেশিরভাগ শাবক প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে থাকতে পারছে না কারণ শিকারী এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে উঠছে। এবার বন বিভাগ বর্ষার আগে ১০০টি নবজাত শাবককে একটি নিরাপদ কেন্দ্রে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেখানে তাদের কৃত্রিমভাবে লালন-পালন করা হবে এবং বর্ষার পরে ট্যাগিং সহ আবার নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে।
পালিঘাটের এই কেন্দ্রটি ডিম থেকে কিশোর অবস্থা পর্যন্ত কুমিরদের বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এবং সংরক্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠবে। ইনকিউবেশন পিট, মাইক্রো ট্যাগিং এবং ফিল্ড রিলিজের মতো আধুনিক কৌশল এখানে ব্যবহার করা হবে। পালিঘাটে কুমিরের প্রত্যাবর্তন প্রমাণ করে যে প্রশাসন, বিজ্ঞানী এবং অন্যরা যদি একসঙ্গে কাজ করে, তাহলে বিপন্ন প্রজাতিগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব। আগে এই কুমিরের সংখ্যা লক্ষ লক্ষ ছিল। এখন দেশে মাত্র প্রায় ২৫০০টি অবশিষ্ট রয়েছে। তাদের বেশিরভাগই চম্বল নদীতে বাস করে। প্রতি বছর বাচ্চা জন্মায়, কিন্তু তারা বেঁচে থাকে না। এবার বিশেষ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
চম্বল নদীর গভীরতা, শান্ত প্রবাহ এবং বালুকাময় তীর কুমিরের প্রাকৃতিক আবাসস্থল। এই কারণেই IUCN কর্তৃক সঙ্কটজনকভাবে বিপন্ন হিসেবে ঘোষিত এই প্রজাতিটি এখন মূলত চম্বল, গণ্ডক, সোন এবং রামগঙ্গার মতো নদীতেই সীমাবদ্ধ। তাদের সংরক্ষণের পথেও কম চ্যালেঞ্জ নেই। তবে এই বছর আশার আলো দেখা দিয়েছে।