নাইটক্লাবের মালিক ও চেয়ারম্যান সৌরভ লুথরা আশ্বস্ত করেছেন, নৈশক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সাহায্য ও সমর্থন করা হবে। লুথরা আরও জানান, এই দুর্ঘটনাজনিত শোক ও মানসিক আঘাতের সময় ক্লাব কর্তৃপক্ষ নিহতদের পরিবার ও আহতদের পাশে অটুটভাবে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ক্লাবের মালিকের বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিশ জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, গোয়ায় নাইটক্লাবে অগইকাণ্ডের ঘটনায় পঞ্চম গ্রেফতারি গোয়া পুলিশের। দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় ক্লাবের ম্যানেজার ভরতকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়া আনা হয়েছে। জানা যায়, ক্লাবের নিত্যদিনের কাজকর্মের দেখভাল করতেন ভরতই। তিনি দিল্লির সব্জি মণ্ডির পঞ্জাব বস্তির বাসিন্দা।
advertisement
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর গোয়ার বাগা সমুদ্রসৈকতের কাছে আরপোরায় এই নৈশক্লাবের জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত ২০২৩ সালে একটি লাইসেন্স জারি করেছিল। কিন্তু ক্লাব চালানোর অনুমতি দেওয়ার আগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক, সেগুলো এখনও নিখোঁজ। তদন্তকারীরা জানান, ওই নৈশক্লাবে অগ্নি নিরাপত্তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও দমকলের তরফে ছাড়পত্রও (এনওসি) ছিল না।
কিন্তু কীভাবে আগুন লাগল নৈশক্লাবে? সেই ইঙ্গিতই মিলল ঘটনার দিন ক্লাবের ভিতরের একটি ভিডিও ফুটেজ থেকে। সোমবার প্রকাশ্যে আসা ওই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বেলি ড্যান্স ও লাইভ মিউজিক পারফরম্যান্স চলাকালীন একটি বৈদ্যুতিক বাজি জ্বালানো হয়। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বাজি থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছিটকে বাঁশ দিয়ে ক্লাবের ছাদে গিয়ে লাগে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আগুন দাবালনের মতো ছড়িয়ে পড়ে উপরের কাঠের কাঠামো জুড়ে। রবিবার প্রকাশ্যে এসেছিল নেশক্লাবের অন্য একটি কোণ থেকে তোলা ফুটেজ। সেই ভিডিওতেও দেখা গিয়েছিল, একটি ইলেকট্রনিক ফায়ারক্র্যাকার থেকে ছিটকে আসা স্ফুলিঙ্গ থেকেই ক্লাবের ভিতরে থাকা অস্থায়ী জিনিসপত্রে আগুন ধরে যায়। সোমবার যে ভিডিও ফুটেজ সামনে আসে, সেই ফুটেজও রবিবারের ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগে নৈশক্লাবে। কিন্তু রবিবার ও সোমবার যে ফুটেজ সামনে আসে, তা সিলিন্ডার বিস্ফোরণের প্রাথমিক দাবিকে উড়িয়ে দেয়।
ক্লাবটির অভ্যন্তরীন সাজসজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছিল বাঁশের পাত, তালপাতা এবং অন্যান্য দাহ্য উপকরণ। ক্লাবের কর্মীদের মতে, সেখানকার সব আসবাব ছিল কাঠের। কাঠামোও ছিল কাঠের। তদন্তকারীদের অনুমান, সেই কারণেই আগুন আরও দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। নিমেষে জতুগৃহে পরিণত হয় নৈশক্লাব। তদন্তকারীদের মতে, ছাদে আগুনের স্ফুলিঙ্গ লাগার নিমেষের মধ্যেই চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সপ্তাহান্তের দিন, উপচে পড়া ভিড়, রাত প্রায় ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ভিড়ে ঠাঁসা নাইটক্লাব। একের পর এক গান বাজাচ্ছেন ডিজে। চলছে উদ্দাম নাচ। নিমেষেই মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয় নৈশক্লাব।
