আরও পড়ুন: পঞ্জাবে ভোটের দিনেই 'বড়' অভিযোগের মুখে সোনু সুদ! কমিশনের নির্দেশে 'ঘরবন্দি'
শুরু থেকে শুরু করা যাক। মোদি তখন গুজরাতের (Gujarat) মুখ্যমন্ত্রী। ২০০২ সালের অক্ষরধাম সন্ত্রাসী হামলায় (Akshardham terror attack) নিহত হন ৩০ জন। ২০০৮ সালে দিল্লি, জয়পুর, বেঙ্গালুরু এবং মালগাঁওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন মোদি (PM Narendra Modi)। সেই সময়েই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, শুধুমাত্র একটি কাজের উপর মনোযোগ না দিয়ে দেশব্যাপী সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কগুলিকে ধ্বংস করতে হবে (Nationwide terrorist networks need to be destroyed)।
advertisement
সাল ২০০৫ এবং ২০০৭। একাধিক সন্ত্রাসবাদী হামলার শিকার হল বারাণসী। সমাজবাদী পার্টি (SP) এবং বহুজন সমাজ পার্টির (BSP) শাসনের অধীনে উত্তরপ্রদেশে ২০০৩ থেকে ১৩ পর্যন্ত ক্রমেই বাড়ছে সন্ত্রাস। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি উত্তরপ্রদেশকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংগঠন আইএসআই-এর অধীনে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের হটস্পট করে তুলেছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের (The Indian Express) একটি প্রতিবেদন অনুসারে, তৎকালীন ইউপি সরকার ২০০৬ সালে বারাণসীর একটি জনবেষ্টিত এলাকায় বোমা রাখার অভিযোগে অভিযুক্ত হরকাত-উল জিহাদ ইসলামী (হুজি) অপারেটিভের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। প্রসঙ্গত সেই বিস্ফোরণেই কিন্তু মারা গিয়েছিলেন ২১ জন লোক।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে তৃতীয় দফায় চোখ কারহাল আসনে, আজ প্রথম বিধানসভা ভোটে লড়াইয়ে অখিলেশ যাদব!
খড়্গহস্ত হলেন মোদি (PM Narendra Modi)। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদি শুধু গুজরাতে নয়, সারা দেশে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে শুরু করলেন। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি নিবন্ধ অনুসারে, গুজরাত পুলিশ বাটলায় সন্ত্রাসীদের সন্ধানে সহায়তা করেছিল ।গুজরাত প্রশাসনের পরিশ্রমী হস্তক্ষেপের ফলেই আহমেদাবাদ বিস্ফোরণ মামলায় একাধিক দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। ২০১৪-এ সালে মোদি যখন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন তখনই বুঝতে পেরেছিলেন অযোধ্যা, দিল্লী, বারাণসী, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, হায়দরাবাদ এবং জয়পুর সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য । সাউথ এশিয়া টেরোরিজম পোর্টাল (South Asia Terrorism Portal) অনুসারে, ২০১৪ সালের পর সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদির কৌশল আন্তর্জাতিক মানের কূটনীতির সঙ্গে তুলনীয়। সশস্ত্র বাহিনীকে মুক্তহস্ত দেওয়া, পাকিস্তানের পারমাণবিক কার্যকলাপ এবং সন্ত্রাসকে G20-এর টেবিলে আলোচনার বিষয় হিসাবে নিয়ে আসায় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। এনআইএ (সংশোধনী) আইন ২০১৯ এবং বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) সংশোধনী আইন ২০১৯-কে আরও শক্ত করেছেন। উরি হামলার প্রতিশোধ নজিরবিহীন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মতে, এলডব্লিউই-এর ঘটনা ২০০৯ সালের থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। জম্মু ও কাশ্মীরে, ২০১৭-এ ৮৪৯টি সন্ত্রাসের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছিল। নভেম্বর ২০২১-এ তা প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। উত্তর-পূর্বেও ২০১৪ সালে রিপোর্ট করা ৮২৪টি হিংসাত্মক ঘটনা ২০২০ সালে ১৬২তে নেমে এসেছে। ডিসেম্বর ২০১৪-এ, পাকিস্তান সীমান্ত এবং এলওসি বরাবর ৭৩৪ কিলোমিটার বেড়া দেওয়া হয়েছিল, ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে অতিরিক্ত ১,৩০৬ কিলোমিটারের কাঁটাতার দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় তদন্ত সংস্থার মতো সংস্থাগুলিকে সারা দেশে শক্তিশালী করা হয়েছে। শক্তিশালী হয়েছে ফরেনসিক। সরকার দাউদ ইব্রাহিমের সম্পদ জব্দ করেছে। মাদকের বিরুদ্ধে বাড়তি অভিযান চালানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই প্রথম বলেছিলেন, সন্ত্রাসের কোনও ভাল-মন্দ হয় না। সমস্ত ধরণের সন্ত্রাস অপসারণের বাধ্যবাধকতার কথা বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। সেই পথ ধরেই সন্ত্রাসমুক্ত ভারত তৈরির পথে এগোচ্ছেন মোদি (PM Narendra Modi)।