গরু পাচার মামলায় গত বছরের অগাস্ট মাসে প্রথম অনুব্রতকে গ্রেফতার করে সিবিআই৷ এর পর আসানসোল জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় অনুব্রতকে ওই একই মামলায় গ্রেফতার করে ইডি৷ এর পর দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ বর্তমানে তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন অনুব্রত৷
আরও পড়ুন: অনুব্রত মণ্ডলের এই অবস্থার জন্য কে দায়ী? মীনাক্ষী যা বললেন, তুঙ্গে উঠল শোরগোল
advertisement
অনুব্রতর জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এ দিন ফের তাঁকে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে তোলা হয়৷ অনুব্রতকে আসানসোল জেলে ফিরিয়ে দেওয়া হবে কি না, সেই আবেদনের শুনানিও হয় এ দিন৷ সেই শুনানি চলাকালীনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেন ইডি-র আইনজীবী নীতীশ রানা৷
দিল্লির রউজ অ্যাভিনিউ আদালতে ইডির আইনজীবী নীতেশ রানা বললেন, 'আপাতত ৪-৫ বছর দিল্লিকেই নিজের বাড়ি মনে করুন।'
অনুব্রত আইনজীবীর অবশ্য সওয়াল ছিল, পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল জেলে পাঠানো হোক তাঁকে। কারণ সেখানেই তাঁর বাড়ি এবং সেখানেই এই মামলা চলছে।
এর প্রেক্ষিতেই ইডির আইনজীবী নীতেশ রানা আদালতের উদ্দেশ্যে বলেন, "এই মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা এখানেই আছেন। মামলা এত গভীর যে আপাতত আরো ৪-৫ বছর দিল্লিতেই থাকতে হবে। তাই দিল্লিকেই নিজের বাড়ি ঘর মনে করুন।" এখানেই নানামহলে প্রশ্ন উঠছে, অনুব্রতকে যে সহজে এই মামলা থেকে মুক্তি পাবেন না, সে বিষয়ে কি এতখানি নিশ্চিত ইডি?
আরও পড়ুন: 'অন্যায়, বাহাদুরির কাজ হয়নি!' মেয়ের গ্রেফতারিতে ক্ষুব্ধ কেষ্ট
অনুব্রতকে তিহাড় থেকে আসানসোলে পাঠানোর মামলার শুনানিতে উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন বিচারক। আগামী ৪ মে অনুব্রত মণ্ডলের মামলার পরবর্তী শুনানি। এই মামলায় সেদিনই রায় দেবেন বিচারক।
সোমবার রউজ অ্যাভিনিউ আদালতে হাজির করানোর সময় সুকন্যার গ্রেফতার নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন অনুব্রত। নিউজ এইট্টিন বাংলার প্রতিনিধির প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘মেয়েকে গ্রেফতার করা অন্যায়। ওকে গ্রেফতার করে কোনও বাহাদুরি করা হয়নি।’’ মেয়েকে গ্রেফতারের পর এই প্রথম তা নিয়ে মন্তব্য করলেন ওই তৃণমূল নেতা।
গত বুধবার গরু পাচার মামলায় দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল সুকন্যাকে। তার পর তাঁকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। গরু পাচার মামলাতেই সাড়ে আট মাস আগে অর্থাৎ গত ১১ অগাস্ট গ্রেফতার করা হয়েছিল সুকন্যার বাবা অনুব্রতকে। তার পর থেকে তদন্তকারীদের নজরে ছিলেন মেয়েও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় আর্থিক তছরূপে অভিযুক্তদের সবাইকেই রাখা হয়েছে তিহাড় জেলের একটি ব্লকে। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল-সহ এই ঘটনায় অভিযুক্ত সকলেই রয়েছেন ৭ নম্বর ব্লকে। গরু পাচার মামলায় ইডি বা সিবিআইয়ের হাতে ধৃত সায়গল হোসেন, মণীশ কোঠারি, এনামুল হক, দিল্লির অর্থ তছরূপের মামলায় গ্রেফতার হওয়া মণীশ সিসোদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈনরা রয়েছেন একই জায়গায়। মনে করা হচ্ছিল, সুকন্যাকেও একই জায়গায় রাখা হবে এবং বাবার সঙ্গে দেখা হবে তাঁর। যদিও সেই সম্ভাবনা নেই বলেই খবর৷