ঘটনাটি পশ্চিম দিল্লির খেয়ালা এলাকার। ৩৫ বছর বয়সী আশিক আলি ওরফে আরিফ এবং ৩৬ বছর বয়সী সন্দীপ যাদব উভয়েই এই এলাকার বাসিন্দা, প্রতিবেশী ছিলেন তাঁরা, ঠিক তিনটি বাড়ি দূরত্বে ছিল তাঁদের ঘর। তাঁদের বন্ধুত্বও বহু বছরের পুরনো। দু’জনেই একই এলাকায় বড় হয়েছিলেন, একসঙ্গে খেলেছেন এবং সুখ-দুঃখে একে অপরের পাশে থাকতেন। সন্দীপ বডি বিল্ডিংয়ের জন্য সাপ্লিমেন্ট বিক্রি করতেন এবং আরিফ পোশাকের ব্যবসা করতেন। তাঁদের উভয় পরিবারই একে অপরকে ভালভাবে চিনত। কিন্তু রবিবার রাতে বন্ধুত্ব এমন শত্রুতায় পরিণত হল যা পুরো এলাকাকে ধাক্কা দিয়েছে।
advertisement
রবিবার রাত ৮:৩০ থেকে ৯:৩০-র মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সন্ধ্যায় আরিফ এবং সন্দীপ খেয়ালার একটি পার্কে বসে ছিলেন। কোনও বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। বলা হচ্ছে যে আরিফ সন্দীপের কাছ থেকে কিছু বডি বিল্ডিং সাপ্লিমেন্ট কিনেছিলেন, যার টাকা তিনি দেননি। সন্দীপ সেই টাকা চেয়েছিলেন, কারণ তাঁর মা অসুস্থ ছিলেন এবং মায়ের চিকিৎসার জন্য তাঁর টাকার প্রয়োজন ছিল।
এই প্রসঙ্গে সন্দীপের বৌদি সুমিত্রা যাদব বলেন, ‘‘আরিফ রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফোন করে। সে সন্দীপকে বাইরে ডেকে পাঠায়। সন্দীপের স্ত্রী আমাদের বলেছে যে আরিফ সাপ্লিমেন্টের জন্য টাকা দেয়নি এবং তারা এই নিয়ে ঝগড়া করছে।’’ সুমিত্রা আরও বলেছেন যে সন্দীপ আগেও আরিফকে সাহায্য করার জন্য অনেক টাকা খরচ করেছিলেন। আরিফের জামিনের জন্য একবার তিনি ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন এবং সম্প্রতি আরিফকে একটি ফ্ল্যাট কিনতে আর্থিকভাবেও সাহায্য করেছিলেন।
এই নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। পার্কে শুরু হওয়া তর্ক শীঘ্রই হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এরপর রাগে দুজনেই একে অপরের উপর ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। আশপাশের লোকজন দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই দু’জনকেই দীনদয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে পুলিশকে জানানো হয় যে দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি ছুরি উদ্ধার করেছে যা এখন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ বিচিত্র বীর বলেন, “আমরা এখনও জানতে পারিনি কে প্রথমে আক্রমণ করেছিলেন। সেই সময় পার্কে আরও কিছু লোক উপস্থিত ছিলেন যাঁদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি।” আরিফের আত্মীয় পারভিনা বলেন, “আরিফ এবং সন্দীপ খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। সন্দীপ আরিফকে জামিন দিতেও সাহায্য করেছিল। আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না যে এটা কীভাবে ঘটল।” অন্য দিকে, সন্দীপের বৌদি সুমিত্রা বলেন, “সন্দীপ তার মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা চাইছিল। সম্ভবত এতে আরিফ আহত হয়েছিল এবং সে সন্দীপকে আক্রমণ করেছিল।”