বলা ভাল, পরিবারের অন্য়তম প্রধান ভরসাই ছিলেন সদ্য় কৈশোর পেরনো অঞ্জলি। নিজের তিন ভাইবোন সহ পাঁচজনের সংসারের ভারও ছিল তাঁর উপরেই। এই বয়সে এত দায়িত্ব নিয়েও অঞ্জলি অবশ্য় হাসিখুশিই ছিলেন। পছন্দ করতেন পঞ্জাবি গান শুনতে। তার সঙ্গে মানানসই মেক আপ করে ইনস্টাগ্রাম রিলসও তৈরি করতেন তিনি। প্রাণবন্ত সেই অঞ্জলির এমন মর্মান্তিক পরিণতি হবে, তা অবশ্য় কল্পনাও করতে পারছেন না কেউ!
advertisement
আরও পড়ুন: মহিলাকে চাকার নীচে নিয়ে ১২ কিলোমিটার ছুটল গাড়ি, দিল্লিতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, অঞ্জলির মৃত্য়ুর পর তাঁর পরিবারের ভবিষ্য়ৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বছর আটেক আগে অঞ্জলির বাবার মৃত্য়ু হয়। তাঁর মাও অসুস্থ। পরিবারের হাল ধরতে তাই দশম শ্রেণির পরই পড়াশোনা ছেড়ে দেন অঞ্জলি। এর পর একটি সেলুনে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে কাজও করতেন অঞ্জলি। সবমিলিয়ে দিনে থেকে ১০০০ টাকা আয় হয়ে যেত তাঁর। যেহেতু কাজ শেষ করতে দেরি হয়ে যেত, তাই অনেক সময়ই বেশি রাতে বাড়ি ফিরতে হত অঞ্জলিকে।
আরও পড়ুন: দিল্লি কাণ্ডে নয়া মোড়, তরুণীর সঙ্গে ছিলেন এক বান্ধবীও! দুর্ঘটনার পরই উধাও
দুর্ঘটনার পর স্বভাবতই অঞ্জলির শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। মেয়ের এই পরিণতি দেখেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তাঁর মা। তিনি জানিয়েছেন, অঞ্জলি খুবই সাহসী এবং মানসিক ভাবে শক্তিশালী ছিলেন। দায়িত্ব নেওয়া থেকে পিছিয়ে যেতেন না। সেলুনে কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানানো, কনে সাজানোর কাজও করতেন অঞ্জলি। এ সব মিলিয়েই সংসার চালিয়ে নিতেন তিনি। যদিও লকডাউনের সময় সেই উপার্জনও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাতেও দমেননি অঞ্জলি।
পরিবারের দেখভালের পাশাপাশি অঞ্জলি নিজে বিউটিশিয়ান কোর্স করার জন্য়ও পয়সা জমাচ্ছিলেন। এ ছাড়াও রাজনীতি এবং বিভিন্ন নাগরিক ইস্য়ুতেও আগ্রহ ছিল তাঁর। রাস্তা সারানো নিয়ে একবার এক বিধায়কের কাছে গিয়েও দরবার করেছিলেন। অঞ্জলির বোনের দাবি, পুরসভার কাউন্সিলর হওয়ার জন্য়ও একবার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন অঞ্জলি।