বিচারপতি যশবন্ত ভার্মাকে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও সেখানেও দেখা দিয়েছে সমস্যা৷ ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন এই সিদ্ধান্তের সরাসরি বিরোধিতা করে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা ‘আস্তাকুঁড়’ নন৷
সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পরেই ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি যশবন্ত ভার্মাকে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমাদের অবাক করেছে৷ আমরা ট্র্যাশ বিন নই৷’
advertisement
জানা গিয়েছে, কলেজিয়ামের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হবে৷ কেন্দ্র তাতে সিলমোহর দিলেই বিচারপতি ভার্মার বদলি প্রস্তাব কার্যকর হবে৷
সম্প্রতি জাস্টিস ভর্মার দিল্লি বাংলোয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, তখন শহরে উপস্থিত ছিলেন না বিচারপতি। পরিবারের লোকেরা দমকলকে খবর দেয়, আগুন নিভতেই একটি ঘর থেকে বেরিয়ে আসে বিপুল ক্যাশ টাকা। পুলিশের নিয়ম মোতাবেক, রিকভারিতে উল্লেখ করা হয় সেই বিপুল পরিমাণের টাকা। এত পরিমাণ হিসেব বহির্ভূত টাকার হদিস এক হাইকোর্টের বিচারপতির বাড়ি থেকে উদ্ধার হতেই নড়ে চড়ে বসে সরকার। খবর যায় প্রধান বিচারপতির কাছে। তারপরেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের কলেজিয়ামের বৈঠকে গৃহীত হয় যশবন্তকে বদলির সিদ্ধান্ত৷
কে এই বিচারপতি যশবন্ত ভার্মা?
দিল্লি হাইকোর্টের ওয়েবসাইট অনুসারে, ১৯৬৯ সালের ৬ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদে জন্মগ্রহণ করেন যশবন্ত৷ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের হংসরাজ কলেজে বিকম (অনার্স) পাশ করে পরে মধ্যপ্রদেশের রেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
বিচারপতি ভার্মা ১৯৯২ সালের ৮ অগাস্ট ইলাহাবাদ হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে নিজের নাম নথিভুক্ত করেছিলেন।
হাইকোর্টের ওয়েবসাইট অনুসারে, তিনি সংবিধান এবং শ্রম বিরোধ সম্পর্কিত বিষয়গুলি পরিচালনা করতেন, সেইসাথে শিল্প ও কর্পোরেশন এবং কর নিয়ন্ত্রণকারী আইন বিষয়ক কাজও তাঁর কাজের অংশ ছিল।
২০০৬ সাল থেকে তিনি ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিশেষ আইনজীবী ছিলেন। পরবর্তীকালে, তিনি সেখানকারই প্রধান স্থায়ী আইনজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বিচারপতি ভার্মা ২০১৪ সালের ১৩ অক্টোবর ইলাহাবাদ হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন।
দিল্লি হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বিচারপতি ভার্মা ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন৷ এরপর ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর দিল্লি হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন।
বিচারপতি ভার্মা এখনও পর্যন্ত এই নগদ উদ্ধারের ঘটনায় কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি৷ তাঁকে আদালতেও দেখা যায়নি৷ তাঁর আদালতের কর্মকর্তারা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন যে, বিচারক “ছুটিতে” আছেন।