শিশুটির সাক্ষ্য অনুসারে, তার মা গত ৭ জুন রাতে ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়ির প্রধান দরজা খোলা রেখেছিল। মধ্যরাতের দিকে চারজন লোক ঢোকে বাড়িতে৷ তাদের সঙ্গে ছিল জনৈক ‘কাশী আঙ্কল’৷ পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে বাচ্চার পরিচিত এই কাশী আঙ্কলই, যার পুরো নাম কাশীরাম প্রজাপত, সে-ই তার মায়ের প্রেমিক৷ অভিযোগ, তারা বীরুকে বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এবং শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। ঘুমের ভান করে পড়ে থাকা শিশু দেখতে পায় পুরো হত্যাকাণ্ডই৷
advertisement
তার কথায়, “আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম৷ দরজায় একটা মৃদু শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলে দেখি মা গেট খুলছে। কাশী আঙ্কেল বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন; তার সঙ্গে আরও চারজন লোক ছিল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম, আমি উঠলাম না, আমি চুপচাপ সবকিছু দেখতে লাগলাম। তারা আমাদের ঘরে ঢুকল। আমি দেখলাম আমার মা বিছানার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ওই লোকগুলো বাবাকে ঘুষি মারল, তার পা মুচড়ে দিল এবং তার শ্বাসরোধ করল। কাশী আঙ্কল বালিশ দিয়ে বাবার মুখ ঢেকে রাখে। আমি যখন আমার বাবার দিকে হাত বাড়ালাম, তখন কাশী আঙ্কল আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বকুনি দেয়৷” অসহায় বালকের আরও সংযোজন, “আমি ভয়ে চুপ হয়ে গেলাম। কয়েক মিনিট পর বাবা মারা গেল… তার পর সবাই চলে গেল।”
তদন্ত
পুলিশের মতে, অনিতা এবং কাশীরাম আগে থেকেই খুনের পরিকল্পনা করেছিল। পুলিশের ধারণা, তাদের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। অনিতা খেরলিতে একটি ছোট দোকান চালাত, যেখানে স্থানীয় রাস্তার বিক্রেতা কাশীরাম প্রায়ই যেত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পায় বলে জানা গিয়েছে।
অভিযোগ, অনিতা এবং কাশীরাম চারজন কন্ট্রাক্ট কিলারকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে এই হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ৭ জুন রাতে, অনিতা মূল দরজাটি খোলা রেখে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। ভাড়াটে খুনিদের নিয়ে মোটরসাইকেলে কাশীরাম ওই বাড়িতে আসে। ঘুমন্ত অবস্থায় বীরুর উপর হামলা করা হয় এবং পরের দিন সকালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
প্রাথমিকভাবে, অনিতা আত্মীয়দের জানিয়েছিলেন যে তার স্বামী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে, শরীরের অবস্থা, স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন, ভাঙা দাঁত এবং শ্বাসরোধের চিহ্ন দেখে সন্দেহ তৈরি হয়। ডাক্তারি পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে বীরুকে খুন করা হয়েছে।
গ্রেফতার এবং প্রমাণের পথ
নিহত যুবকের ভাই গব্বর জাটভ অভিযোগ দায়ের করার পর, পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ স্থানীয় এলাকার ১০০ টিরও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ ক্লিপ পর্যালোচনা করে এবং কল ডেটা রেকর্ড বিশ্লেষণ করে। তিনজন চক্রী, অনিতা, কাশীরাম এবং একজন কন্ট্রাক্ট কিলার, ব্রিজেশ জাটভকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি তিন অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ।