সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মাকে মাঝরাতে ছুটিতে পাঠিয়ে, সুপ্রিম কোর্টে মুখ পুড়েছিল মোদি সরকারের। এবার তাঁকে সরিয়েই দেওয়া হল।
সিবিআইয়ের অন্দরে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত গত বছর। ২০১৮’র শেষের দিকে, এই শীর্ষ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অন্দরের অশান্তিতে উত্তাল হয় দেশ।
একদিকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে দায়ের হয় এফআইআর। আবার সেই আস্থানাই, সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার পালটা অভিযোগ তোলেন।
advertisement
একসময়ে নাটক চরমে ওঠে। ২৩ অক্টোবর মাঝরাতে সিবিআইয়ের এই দুই শীর্ষ কর্তাকেই ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বিরোধীরা তখনই দাবি করে, মোদি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, গুজরাত ক্যাডারের অফিসার রাকেশ আস্থানাকে বাঁচাতেই সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া, অলোক ভার্মা রাফাল ইস্যুতেও খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছিলেন বলে দাবি বিরোধীদের।
সে কারণেই কি মোদি সরকারের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছিলেন সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মা? তাই কি মাঝরাতে তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল? এর বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন অলোক ভার্মা। সেই মামলায় জোর ধাক্কা খায় মোদি সরকার।
সিবিআই ডিরেক্টরকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত, গত মঙ্গলবার, খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ। তবে, এও নির্দেশ দেয়, সিবিআই ডিরেক্টরের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সিলেক্ট কমিটি।
বুধবার রাতেই প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে নিয়ে তৈরি তিন সদস্যের সেই কমিটি বৈঠকে বসে। খাড়গের চাপের মুখে এই বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার ফের বৈঠক হয়। এদিনও খাড়গে অলোক ভার্মার অপসারণে আপত্তি জানান। কিন্তু, তা ধোপে টেকেনি। কারণ, সিভিসির রিপোর্টকে হাতিয়ার করে অলোক ভার্মাকে সিবিআই ডিরেক্টর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিচারপতি সিক্রি। বিরোধীদের কটাক্ষের সুরে প্রশ্ন, রাফাল চুক্তিতে সিবিআই তদন্তের এফআইআর দায়ের করে ফেলতে পারেন, এই আশঙ্কা থেকেই কি তড়িঘড়ি সিবিআই শীর্ষ পদ থেকে অলোক ভার্মাকে সরিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি?
সিবিআই ডিরেক্টর পদ থেকে ৩১ জানুয়ারি অবসর নেওয়ার কথা ছিল অলোক ভার্মার তার আগেই তাঁকে সরিয়ে করা হল দমকলের ডিজি। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে অসমারিক প্রতিরক্ষা এবং হোমগার্ডের দায়িত্ব ৷