বিমান দুর্ঘটনার সম্ভাব্য একাধিক কারণ উঠে আসছে৷ তবে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ড্রিমলাইনার ভেঙে পড়ার পিছনে মানুষের ভুল দায়ী কি না, সেই প্রশ্ন উস্কে দিলেন যাত্রীবাহী বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন আসরখ শেখ৷
সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই অভিজ্ঞ পাইলট জানান, খালি চোখে দুর্ঘটনার মুহূর্তের ভিডিও দেখে মনে হয়েছে, দুই পাইলটের কোনও ভুলেও ভেঙে পড়তে পারে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-১৭১৷ এর পাশাপাশি অবশ্য আরও দু তিনটি কারণের কথা জানিয়েছেন ওই বিমান চালক৷
advertisement
ক্যাপ্টেন আসরক শেখ বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত মত৷ দুর্ঘটনার মুহূর্তের ভিডিও দেখে আমার যা মনে হয়েছে, সেটাই বলছি৷ কাউকে দোষারোপও করছি না৷ আমার অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে, এখানে মানুষের ভুল ছিল৷ হয়তো আমি ভুলও হতে পারি৷ আমি একথা বলছি কারণ বিমানটি টেক অফের সময় দুটি ইঞ্জিনই ঠিকঠাক কাজ করেছে৷ দুটি ইঞ্জিনই পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করে৷ নাহলে বিমানটি উড়তে পারত না৷ তার পর তিন কিলোমিটারের মধ্যেই সেটি আকাশ থেকে পড়ে গেল৷ যা কখনও শোনা যায়নি৷’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে, বিমানের দুই ডানার ফ্ল্যাপ সেটিং উপরের দিকে করা ছিল৷ অথচ আকাশে ওড়ার পরেও বিমানের চাকা নামানো ছিল৷ বিমান মাটি ছেড়ে দশ থেকে ৫০ ফুট উপরে উঠলেই আমরা সাধারণত বিমানের চাকাগুলিকে তুলে নিই বা বিমানের ভিতরে ঢুকিয়ে নিই৷ কিন্তু এক্ষেত্রে বিমানটি প্রায় ৪২৫ ফুট উপরে উঠে গেলেও সেটির চাকা বাইরে ছিল৷ এটা খুবই অবাক করার মতো৷ আকাশে উপরের দিকে ওঠার সময় বিমানের ফ্ল্যাপ সেটিং নীচের দিকে থাকার কথা ছিল, যদিও তা ছিল না৷ হয়তো দুই পাইলটের মধ্যে একজন ভুল করে ল্যান্ডিং গিয়ারের বদলে ফ্ল্যাপগুলিকে উপরের দিকে তুলে দেন৷ আমার মনে হয়েছে, দুর্ঘটনার পিছনে এই ভুলই কারণ হতে পারে৷’
বিমানের ডানার সঙ্গেই এই ফ্ল্যাপ থাকে৷ বিমানের আকাশে ওড়া বা অবতরণের সময় এই ফ্ল্যাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়৷ বিমানের ওঠানামার সময় এই ফ্ল্যাপ সেটিং পরিবর্তন করতে থাকেন পাইলটরা৷ এই ফ্ল্যপের সাহায্যেই বিমান রানওয়েতে অল্প দূরত্ব দৌড়েই যাতেই মাটি ছেড়ে আকাশে উড়তে পারে৷ বড় বড় যাত্রীবাহী বিমানে ককপিট থেকেই হাইড্রলিক লিভারের সাহায্যে ফ্ল্যাপের সেটিং বদলানো হয়৷ ছোট বিমানের ক্ষেত্রে তা করা হয় ইলেক্ট্রিক মোটরের সাহায্যে৷ বলা ভাল, ডানার গায়ে লেগে থাকা ছোট ছোট ডানা হিসেবে কাজ করে ফ্ল্যাপ৷ যা বিমানের ওড়া এবং অবতরণের প্রক্রিয়াকে মসৃণ করে৷
তবে এর পাশাপাশি বিমানের জ্বালানির মধ্যে কোনও কারণে ভেজাল জাতীয় কিছু মিশে গিয়ে থাকলেও সঠিক জ্বালানির সরবারহ না পেয়ে বিমানের দুই ইঞ্জিনই কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে৷ হাইড্রলিক ব্যবস্থা অকেজো হয়ে যাওয়া, পাখির ধাক্কার কারণেও আহমেদাবাদে বিমানটি ভেঙে পড়তে পারে৷