গুজরাত হিংসার সময় ২০০২ সালে বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত সরকার৷ সোমবার সেই নির্দেশকে খারিজ করে ওই ১১ জন সাজাপ্রাপ্তকে ফের জেলে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ ২০২২ সালের ১৫ অগাস্ট মুক্তি পেয়েছিল ওই সাজাপ্রাপ্তরা৷
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর বিলকিস বলেছেন, ‘ন্যায়বিচার এটাকেই বলে৷ আমাকে, আমার সন্তানদের এবং সব নারীদের ন্যায়বিচারের বিশ্বাস এবং ভরসা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে আমি ধন্যবাদ জানাই৷’
advertisement
আরও পড়ুন: লাক্ষাদ্বীপ বেড়াতে গেলে চাই পারমিট, কীভাবে আবেদন করবেন? জানুন খুঁটিনাটি
সোমবার গুজরাত সরকারের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বিলকিসের ধর্ষণকারীদের ২ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ নিজের আইনজীবী শোভা গুপ্তের মাধ্যমে বিবৃতি জারি করে বিলকিস বলেছেন, ‘আমি আনন্দে কাঁদছি৷ গত দেড় বছরে এই প্রথমবার আমি হাসলাম৷ আনন্দে আমি নিজের সন্তানদের জড়িয়ে ধরেছি৷ মনে হচ্ছে আমার বুক থেকে একটা পাহাড় সমান পাথর নেমে গেল, এখন আমি আবার নিঃশ্বাস নিতে পারছি৷’
বিলকিস জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ১৫ অগাস্ট যখন গুজরাত সরকার তাঁর ধর্ষকদের মুক্তি দেয়, সেই খবরে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি৷ এই কঠিন সময়ে যাঁরা তাঁর পাশে ছিলেন,তাঁদের উদ্দেশ্যেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিলকিস বলেছেন, ‘আপনারা আমার লড়াইয়ের ইচ্ছে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, শুধু আমার জন্য নয়, দেশের প্রত্যেক নারী যে ন্যায়বিচার পাবেন, সেই ভরসাও ফের প্রতিষ্ঠিত হল৷ আপনাদের সবাইকে আমার ধন্যবাদ৷’
এ দিন ওই ১১ সাজাপ্রাপ্তকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার বিষয়ে গুজরাত সরকারের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত৷ কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বিলকিস মামলার বিচার প্রক্রিয়া মহারাষ্ট্রে সরানো হয়েছিল৷ ফলে সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি দিতে হলেও সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শুধুমাত্র মহারাষ্ট্র সরকারেরই আছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত৷
বিলকিসের হয়ে বছরের পর বছর আদালতে আইনি লড়াই চালিয়েছেন শোভা গুপ্ত৷ ভাল আচরণের অজুহাতে বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত সরকার৷ মুক্তির পর মালা পরিয়ে,মিষ্টি খাইয়ে তাদের নায়কের সম্মানও দেওয়া হয়৷ বিজেপির একাধিক বিধায়ক, সাংসদদের সঙ্গে একই মঞ্চেও দেখা গিয়েছিল ওই সাজাপ্রাপ্তদের৷ বিলকিসের আইনজীবী শোভা গুপ্ত প্রশ্ন তুলেছেন, কোন ভাল আচরণের ভিত্তিতে গণধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত সরকার?