উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ত্রিপুরার সোনামুড়া সীমান্তে আড়াই লক্ষ শরণার্থীকে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়ে হিমাংশু মোহন চৌধুরী ভারত বাংলাদেশ উভয় রাষ্ট্রের মধ্যে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ওই সময়ে শ্রী চৌধুরী ছিলেন সোনামোড়ার এসডিও। তাঁর এই অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ভারত সরকার ১৯৭২ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে বাংলাদেশের অনবদ্য বন্ধুর সম্মানে ভূষিত করে।
advertisement
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আশ্রয় গ্রহণ করে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা সহ সেদেশের সাধারণ শরণার্থী পরিবার। কাতারে কাতারে শরণার্থীরা সোনামুড়া সীমান্ত এলাকায় আশ্রয় গ্রহণ করে। একসময় এই শরণার্থীর সংখ্যা আড়াই লক্ষ ছাড়িয়ে যায় । ওই সময়ে ত্রাতার ভূমিকা পালন করেন সিভিল সার্ভিস অফিসার তথা সোনামুড়ার এসডিও হিমাংশু মোহন চৌধুরী। তিনি প্রত্যেকের নিরাপত্তা, থাকা, খাওয়া সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা করেন। একজন সিভিল সার্ভিস অফিসারের এই মানব দরদী ভূমিকায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয় গোটা উপমহাদেশ।
আরও পড়ুন: 'একচুলও এগোয়নি তদন্ত', শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা! চাপ বাড়ল বিরোধী দলনেতার
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এসডিও হিমাংশু মোহন চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত তাজউদ্দিন আহমেদের পরিবার। তাঁর সেবার কথা এখনো ভুলেনি ওই পরিবার । ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রয়াত তাজ উদ্দিন আহমেদের কন্যা তৎকালীন বাংলাদেশের এমপি সেমিন হোসেন রিমি আগরতলায় এসে হিমাংশু মোহন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁর পরিবার এবং বাংলাদেশের হয়ে কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: এ কী বলে ফেললেন কুন্তল! দেখালেন হাতও! নিশানায় কি পার্থ? তোলপাড় আদালত
বৃহস্পতিবার পদ্মশ্রী হিমাংশু মোহন চৌধুরীর অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে ছুটে যাওয়ার পর এই বিষয়ে নিজের সামাজিক মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা লিখেন, "ত্রিপুরা থেকে প্রথম পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত শ্রী হিমাংশু মোহন চৌধুরী বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছেন। অসুস্থতার খবর পেয়ে আজ বিকালে তাঁর বড়দোয়ালীস্থিত বাসভবনে গিয়ে দেখা করি এবং শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজখবর নিই। ইতিমধ্যেই, মেডিকেল টীমেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি সোনামুড়া এসডিও পদে কর্মরত ছিলেন এবং বহুসংখ্যক শরণার্থীদের খাবার এবং আশ্রয় প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। আমি ঈশ্বরের নিকট তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।"