চলতি বছরে এটি GRSE-র নির্মিত ও সরবরাহ করা পঞ্চম যুদ্ধজাহাজ, যা দেশের যে কোনো শিপইয়ার্ডের পক্ষেই এক বিরল কৃতিত্ব। আটটি ASW SWC জাহাজের সিরিজের মধ্যে ‘অঞ্জদ্বীপ’ তৃতীয়। এই জাহাজটির মাধ্যমে GRSE মোট ১১৫তম যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করল এবং নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিল ৭৭তম যুদ্ধজাহাজ। ইস্টার্ন নাভাল কমান্ডের চিফ স্টাফ অফিসার (টেকনিক্যাল) রিয়ার অ্যাডমিরাল গৌতম মারওয়াহা, ভিএসএম আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজটি গ্রহণ করেন।
advertisement
আরও পড়ুন: হাঁসখালির নাবালিকা গণধর্ষণ কাণ্ডে ৩ জনের যাবজ্জীবন! বাকিদের কী সাজা দিল আদালত?
এর আগে ২০২৫ সালে GRSE যে চারটি যুদ্ধজাহাজ নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে, সেগুলি হল অ্যাডভান্সড গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট ‘হিমগিরি’, ASW SWC সিরিজের প্রথম দুটি জাহাজ ‘অর্ণালা’ ও ‘অন্দ্রোথ’ এবং সার্ভে ভেসেল (লার্জ) ‘ইক্ষক’। চারটিই ইতিমধ্যে নৌবাহিনীতে কমিশন হয়েছে। ‘অন্দ্রোথ’ হস্তান্তরের মাত্র চার মাসের মধ্যেই ‘অঞ্জদ্বীপ’ ডেলিভারি হওয়া GRSE-র দ্রুত ও দক্ষ উৎপাদন ক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ।‘অঞ্জদ্বীপ’ আত্মনির্ভর ভারতের প্রতিফলনও বটে।
এই শ্রেণির ASW SWC জাহাজগুলির অন্তর্ভুক্তির ফলে সাবমেরিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতীয় নৌসেনার শক্তি ও সক্ষমতা আরও বহুগুণ বাড়ল। উপকূলীয় জলসীমায় শত্রুপক্ষের সাবমেরিন শনাক্তকরণ, নজরদারি ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে ‘অঞ্জদ্বীপ’-এর মতো জাহাজগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আধুনিক সেন্সর, কমব্যাট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং অ্যান্টি-সাবমেরিন অস্ত্রের সমন্বয়ে এই জাহাজগুলি নৌসেনাকে অগভীর জলে সাবমেরিন হুমকি মোকাবিলায় কৌশলগত সুবিধা দেবে। ফলে দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা আরও মজবুত হবে এবং উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ হবে।
‘অর্ণালা’ ও ‘অন্দ্রোথ’-এর মতো এই জাহাজেও GRSE-র তৈরি দেশীয় ৩০ মিমি নেভাল সারফেস গান ব্যবহার করা হয়েছে এবং জাহাজটির প্রায় ৮৮ শতাংশ উপাদানই দেশীয়। এই শ্রেণির জাহাজগুলি উপকূলীয় জলসীমায় সাব-সারফেস নজরদারি, অনুসন্ধান ও আক্রমণে সক্ষম। বিমান সহায়তায় সমন্বিত অ্যান্টি-সাবমেরিন অভিযানে অংশ নেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে। জাহাজে রয়েছে আধুনিক কমব্যাট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, লাইটওয়েট টর্পেডো ও অ্যান্টি-সাবমেরিন রকেট। মোট ৫৭ জন কর্মীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, যার মধ্যে সাতজন অফিসার। তিনটি ওয়াটার জেট ও মেরিন ডিজেল ইঞ্জিনের কারণে ‘অঞ্জদ্বীপ’ অত্যন্ত চটপটে ও সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য।
মাত্র ২.৭ মিটার ড্রাফট হওয়ায় উপকূলের খুব কাছে গিয়ে সাব-সারফেস হুমকি মোকাবিলা করতে পারে এই জাহাজ। বর্তমানে GRSE আরও ১২টি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করছে, যার মধ্যে রয়েছে দুটি পি-১৭এ অ্যাডভান্সড স্টেলথ ফ্রিগেট, পাঁচটি ASW SWC, একটি সার্ভে ভেসেল (লার্জ) এবং চারটি নেক্সট জেনারেশন অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল। পাশাপাশি জার্মান ক্লায়েন্টের জন্য ১২টি মাল্টি-পারপাস ভেসেল, চারটি গবেষণা জাহাজ এবং ১৩টি হাইব্রিড ফেরি তৈরি হচ্ছে। চলতি আর্থিক বছরে পাঁচটি নিউ জেনারেশন করভেট নির্মাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে।
