শ্রদ্ধার সব দেহাংশের খোঁজ মেলেনি। সেই দেহাংশ খুঁজতে দিল্লির সব থানায় নির্দেশ জারি করা হয়েছে। তখনই জানা যায়, গত জুন মাসে পূর্ব দিল্লির ত্রিলোকপুরী এলাকায় রামলীলা ময়দান থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি কাটা মুন্ডু এবং একটি কাটা হাত। দেহাংশগুলি আবর্জনা স্তূপের মাঝে খোলা অবস্থায় পড়েছিল । পচে গলে যাওয়ার কারণেই সেই সময় পূর্ব দিল্লি পুলিশ কিণারা করতে পারেনি দেহাংশগুলি কার! শ্রদ্ধা খুনের ঘটনা সামনে আসার পর দেখা যাচ্ছে, ঠিক তার আগের মাস অর্থাৎ ১৮ মে খুন হন শ্রদ্ধা ওয়ালকর। তাহলে কি দুইয়ে দুইয়ে চার মিলল? দিল্লি পুলিশের প্রাথমিক ভাবনা ছিল, জুন মাসে উদ্ধার হওয়া সেই কাটা মুন্ডু এবং দেহাংশ কি শ্রদ্ধার? নিশ্চিত হতে সেই পচাগলা কাটা হাত আর মুন্ডু ডিএনএ টেস্টে পাঠানো হয়।
advertisement
ইতিমধ্যে জারি ছিল তদন্ত এবং রিপোর্টে দেখা যায়, সেই কাটা মাথা আর হাত শ্রদ্ধার নয়, এক বাঙালি প্রৌঢ়ের। অদ্ভুতভাবে, দু'জনের খুন ও দেহাংশ সংরক্ষণের উপায় এক! শ্রদ্ধার দেখ টুকরো টুকরো করে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল আফতাব! পূর্ব দিল্লির পাণ্ডবনগর এলাকায় এই বাঙালি প্রৌঢ়কে খুনের পর মৃতদেহ কয়েক টুকরো করে রেফ্রিজারেটরে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠল স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশের ডিসিপি ক্রাইম অমিত গোয়েল জানান, '' ৫ জুন পূর্ব দিল্লির ত্রিলোকপুরী এলাকায় রামলীলা ময়দান থেকে উদ্ধার হয়েছিল কয়েকটি দেহাংশ। আগামী ৩ দিন ধরে মেলে ২টো পা, ২টো থাই, একটি কাটা মাথা ও একটি হাতের অগ্রভাগ। পুলিশে একটি মামলা দায়ের করা হয়।'' তিনি আরও জানান, '' দেহাংশগুলি কার? তা খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু হয়! ভয়ঙ্কর খুন! আমরা সমস্ত ফুটেজ খতিয়ে দেখি। বহু মানুষককে জেরা-জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অবশেষে জানা যায়, মৃতের নাম অঞ্জন দাস।
পুলিশের ধারণা, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্ত্রী ও ছেলের হাতে খুন হয়েছেন তিনি। দিল্লির পাণ্ডবনগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে দেহাংশ উদ্ধার হওয়ার ঘটনার পরই প্রকাশ্যে আসে এই হত্যাকাণ্ড। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, স্ত্রী পুনম ও তার ছেলে মাদক প্রয়োগ করে হত্যা করে অঞ্জনকে। তার পর তাঁর নিথর দেহ কয়েক টুকরোয় খণ্ডিত করে রেখে দেয় ত্রিলোকপুরীতে নিজেদের বাড়ির ফ্রিজেই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আফতাবের মতো এখানেও বেশ কিছু দিন ধরে দেহাংশগুলি ফেলা হয়েছে। অভিযোগ, ফ্রিজ থেকে দেহাংশ বার করে রোজ রাতে পাণ্ডবনগরের বিভিন্ন অংশে ফেলে আসত মা ও ছেলে। তদন্ত শুরু করে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ মা ও ছেলেকে গ্রেফতার করেছে।