আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার যে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো বা এএআইবি জমা দিয়েছে, তাতে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বিমানের দুটি ইঞ্জিনে জ্বালানি যাওয়ার সুইচ বন্ধ করে দেওয়ার কথাই বলা হয়েছে৷ মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি সুইচই বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে তদন্ত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে৷ দুই পাইলটের মধ্যে রেকর্ড হওয়া কথোপকথনেও সেই ইঙ্গিতই মিলেছে৷ বিমানের এক পাইলটকে দ্বিতীয়জনকে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, তুমি কেন ইঞ্জিনে জ্বালানি যাওয়া বন্ধ করলে৷ জবাবে দ্বিতীয় পাইলট বলেন, আমি কিছু করিনি৷ জ্বালানি না পাওয়ার কারণেই বিমানের ইঞ্জিনদুটি শক্তি হারায় এবং তার জেরেই বিমানটি দ্রুত নীচের দিকে নামতে শুরু করে বলেও তদন্ত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে৷
advertisement
প্রাথমিক এই তদন্ত রিুোপ্ট দেখেই বিমান পরিবহণ বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন মোহন রঙ্গনাথন দাবি করেছেন, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে যে দাবি করা হয়েছে তা সত্যি হলে ইচ্ছাকৃত ভাবেই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটিকে দুর্ঘটনার কবলে ফেলার সম্ভাবনা প্রবল৷ সেক্ষেত্রে বিমানটির মৃত দুই পাইলটের একজনের দিকেই সন্দেহের আঙুল ওঠে৷ যদিও এএআইবি-র জমা দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই তদন্ত রিপোর্টের উদ্দেশ্য কারও উপরে দুর্ঘটনার দায় চাপানো নয়, বরং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকানো৷
এনডিটিভি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্যাপ্টেন মোহন রঙ্গনাথন জানিয়েছেন, যেভাবে ইঞ্জিনে জ্বালানি যাওয়ার সুইচ বন্ধের কথা বলা হচ্ছে তাতে দুই পাইলটের ভূমিকা নিয়ে সংশয় একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ ওই বিশেষজ্ঞের মতে, বিমানের ইঞ্জিনে জ্বালানি যাওয়া বা বন্ধ করার সুইচের গঠন যেভাবে থাকে তাতে কোনও ভাবে ভুল করে বা হাত লেগে সেটি চালু অথবা বন্ধ করা সম্ভব নয়৷ কারণ ওই সুইচ নির্দিষ্ট স্লটের মধ্যে থাকে৷ সেটিকে টেনে উপরের দিকে উঠিয়ে অথবা নীচে নামিয়ে চালু এবং বন্ধ করতে হয়৷ ফলে, ভুল করে কেউ পর পর দুটি সুইচ ওভাবে বন্ধ করে দেবেন, তা সম্ভবই নয় বলে দাবি করেছেন ওই বিশেষজ্ঞ৷
গত ১২ জুন আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পর মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ড্রিমলাইনার বিমান৷ ওই দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪১ জন যাত্রী এবং বিমানকর্মীরই মৃত্যু হয়৷ একটি হাসপাতালের হোস্টেল ভবনের উপরে বিমানটি ভেঙে পড়ে৷ যার ফলে আরও ১৯ জন মানুষ প্রাণ হারান৷