TRENDING:

কৃষি সংস্কার: রাজনীতির ক্ষুদ্র স্বার্থকে উপেক্ষা করে এটা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে আলিঙ্গনের সময়

Last Updated:

কৃষিক্ষেত্রে একটা বড়সড় সংস্কার হতে চলেছে। তুচ্ছ রাজনৈতিক স্বার্থ সরিয়ে যদি অর্থনৈতিক দিকগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া যায়, তাহলে নতুন দিকের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#নয়াদিল্লি: দিল্লির রাজপথে কৃষকদের আন্দোলন। অগণিত চাষিদের প্রতিবাদ-আন্দোলন আর বনধের ডাক। জারি সরকার বিরোধী স্লোগান। বিরোধীরাও সমর্থন জানাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে চাষিরা কতটা উপকৃত হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু সবকিছুর আগে আইনের বা কৃষি বিলের গভীরে গিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। তাতে দেখা যাবে কৃষিক্ষেত্রে একটা বড়সড় সংস্কার হতে চলেছে। তুচ্ছ রাজনৈতিক স্বার্থ সরিয়ে যদি অর্থনৈতিক দিকগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া যায়, তাহলে নতুন দিকের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।
advertisement

প্রথমেই তিনটি আইনের উপর আলোকপাত করা যেতে পারে। প্রসঙ্গ উঠে আসে The Farmers (Empowerment and Protection) Agreement on Price Assurance and Farm Services Act, 2020-এর। অনেকটা সুরক্ষিত এই আইন। এক কথায় এটি চুক্তিচাষ। এতে বড় বড় হাউজ একটি এলাকার সমস্ত চাষিদের সঙ্গে আগাম চুক্তি করে। কোম্পানির শর্ত অনুযায়ী, বিশেষ চাষ করতে হবে। উৎপন্ন পণ্য কী দামে চাষিদের থেকে কিনতে হবে, তাও চুক্তিপত্রে লেখা থাকবে। ফলে ফসল ফলানোর পর চাষি নিশ্চিন্ত। অতি-উৎপাদনে বাজারে দাম নামলেও চুক্তি অনুযায়ী বেশি দামে কিনতে বাধ্য থাকবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।

advertisement

রয়েছে The Essential Commodities (Amendment) Act, 2020। এতদিন পেঁয়াজ-আলু-চাল সমস্ত কিছু একটা নির্ধারিত পরিমাণের বেশি মজুত করা যেত না। কারণ কালোবাজারি বলে গণ্য হত। এখন থেকে সেই বাধা আর থাকল না। যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তবে বাকি সময় মজুতে বিধিনিষেধ নেই। রয়েছে Farmer’s Produce Trade and Commerce (Promotion and Facilitation) act, 2020। এর বিরুদ্ধে বেশি ক্ষোভ চাষিদের। চাষিরা তাদের পণ্য মান্ডির বাইরে, জেলার বাইরে এমনকি রাজ্যের বাইরে অবাধে বিক্রি করতে পারবে। এবং ভিনরাজ্যের ব্যবসায়ী এসেও কিনে নিয়ে যেতে পারবে। ওদের সরকারকে কোন ট্যাক্স দিতে হবে না। তাই চাষিরা মান্ডির বাইরে ভাল দাম পেলে স্বাধীন ভাবে বেচতে পারবে।

advertisement

এক্ষেত্রে APMC নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠছে। এর দু’টি কাজ হল, কৃষকেরা যাতে আড়তিয়াদের চক্করে নিজেদের ফসল খুব কম দামে বেচতে বাধ্য না হয় তা সুনিশ্চিত করা এবং সমস্ত ফুড প্রোডিউসকে আগে কৃষি মন্ডির চত্বরে আনতে হবে। পরে নিলামের মাধ্যমে বেচতে হবে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগ্রিকালচারাল প্রোডিউস মার্কেট কমিটি এবং মান্ডি ব্যবস্থা নিয়েও নানা চিন্তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে বাজারের প্রতিযোগিতা, বাজার মূল্য, কমিশন ফি সহ একাধিক বিষয় রয়েছে।

advertisement

কী অবস্থায় থাকবে ফড়ে বা মিডলম্যানরা? এ নিয়ে জল্পনা জারি। সরকারের এই পদক্ষেপ আদৌ মূল বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে পারবে কি না, তা নিয়ে এখনও সন্দেহ রয়েছে। কৃষি আইনের মূল কথা, অন্যান্য পণ্যের মতোই কৃষিপণ্যের বাজার প্রায় অবাধ করে দেওয়া হল। নির্দিষ্ট এলাকার মান্ডিতে বিক্রির বাধ্যবাধকতা রইল না। কিন্তু এতে বড় বড় সংস্থাগুলিকে ব্যবসায় ঢোকার রাস্তা দেওয়া হচ্ছে কি না তাও একটি বিষয়। এক্ষেত্রে একাধিক আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের কথায়, এই মিডলম্যানরা সরে গেলেও একটা ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কৃষিপণ্যের বাজার ছোট ও মাঝারি ব্যাপারিদের হাত থেকে বৃহৎ ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যেতে পারে। বিপুল পুঁজি বিনিয়োগ হতে পারে । ফড়ে বা মিডলম্যানদের নিয়ন্ত্রন পেরিয়ে একটি একচেটিয়া পুঁজির অধীনে আসতে পারে পুরো বাজার।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুজো শেষ হতেই ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মার ইলিশ! জলের দরে টাটকা মাছ না খেলেই নয়
আরও দেখুন

তাই এখন গভীরে বিবেচনা করার সময়। কৃষকদের এই আন্দোলনের নেপথ্যে থাকা আসল বিষয়গুলি নিয়ে বিশদে আলোচনা করার সময়। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ, কর্পোরেশনগুলিকে সমস্ত কিছু বিক্রি করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সামগ্রিক পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে বিরোধীরা। তাঁদের কথায়, সাধারণ চাষি কীভাবে কোনও বড় কর্পোরেশনের সঙ্গে দরাদরি করে লাভদায়ক চুক্তি করতে সক্ষম হবে? চাষিদের ডাকা বনধকেও সমর্থন জানিয়েছেন শরদ পাওয়ার থেকে শুরু করে সোনিয়া গান্ধি সকলেই। শুট-বুটের সরকার বলে জোরালো হয়েছে গর্জন। অনেক রাজনৈতিক দল এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রং বদলেছে। নিজেদের আগের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়িয়ে কৃষকদের স্বার্থকেও ব্যবহার করছে। তাই এখন নানা রাজনৈতিক প্রচার ও বক্তব্যের বিষয়গুলির শিকড়ে গিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। কারণ এখন স্বার্থ কেন্দ্রিক রাজনীতিকে উপেক্ষা করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে আলিঙ্গনের সময়।

বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
কৃষি সংস্কার: রাজনীতির ক্ষুদ্র স্বার্থকে উপেক্ষা করে এটা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে আলিঙ্গনের সময়
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল