বিক্ষোভ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে শনিবার বিকেলেই রাজধানী ইম্ফলে কারফিউ জারি করে সরকার। তার পরেও বিক্ষোভ থামেনি। রাতে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং তিন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এর পরেই উত্তেজিত জনতা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যায় বলে অভিযোগ। বীরেন রাতে আর বাড়িতে ফেরেননি। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেই রয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- বাবা-ছেলের বিলাসবহুল জীবন দেখে মাথা ঘুরে যেত সবার! এবার ফাঁস তাদের ‘গোপন’ রোজগার…!
advertisement
শনিবার মণিপুরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সাপম রঞ্জন, উপভোক্তা বিষয়কমন্ত্রী এল সুসীন্দ্র সিংহ বিজেপি বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের জামাতা আরকে ইমো-সহ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিকের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। হামলাকারীদের দাবি, জিরিবাম জেলায় ছ’জনকে খুন করায় অভিযুক্ত যাঁরা, তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে ইম্ফলে কারফিউ জারি করা হয়। ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, চূড়াচাঁদপুর-সহ মোট সাত জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাগত একাধিক বিধিনিষেধও জারি করা হয়েছে।
রবিবার সকালে মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, ১৬ নভেম্বর রাতে উত্তেজিত জনতা মণিপুরের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়কের বাড়ি এবং সরকারি সম্পত্তিতে হামলা চালিয়েছে। কোথাও কোথাও পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী এবং অসম রাইফেল্সের জওয়ানদের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। রাতের ঘটনায় আট জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব এবং বিষ্ণুপুর থেকে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একাধিক পিস্তল, কার্তুজ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। এলাকায় কার্ফু জারি রয়েছে। আপাতত দু’দিনের জন্য এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
ঘটনার সূত্রপাত কিছু দিন আগে। মণিপুরের জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে।সোমবার জিরিবাম থেকে নিখোঁজ হওয়া ছয়জনের মধ্যে তিনজনের মৃতদেহ জিরি নদীতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। গত রাতে আসামের শিলচরে এক মহিলা এবং দুটি শিশুর অজ্ঞাত লাশ আনা হয়েছিল এবং বর্তমানে পোস্টমর্টেমের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। কর্মকর্তারা পোস্টমর্টেম ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন এবং সনাক্তকরণের উদ্দেশ্যে ছবি সংগ্রহ করেছেন। জিরিবামে সুবিধার অভাবের কারণে, এলাকায় পাওয়া মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্ত শিলচরেই হচ্ছে।