রূপা দেবী তাঁর দেবীকুন্ড সাগর গ্রামের সবচেয়ে বয়স্ক মহিলা। এই গ্রামের জনসংখ্যা পাঁচ হাজারেরও বেশি। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার শ্রবণশক্তি কিছুটা কমে গিয়েছে। আজও রূপা দেবী নিজের কাজ নিজেই করেন। নিজের জীবনের গল্প বলতে গিয়ে রূপা দেবী জানান, তিনি জীবনে অনেক সংগ্রাম করেছেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর স্বামী প্রায় ৫৭ বছর আগেই মারা গিয়েছেন, এরপর তিনিই অন্যতম কর্তা হয়ে উঠেছেন পরিবারের।
advertisement
আজ থেকে প্রায় ৯০ বছর আগে ২০০ টাকা যৌতুকে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। জীবনের শুরুতে তিনি ৫০ কেজি আটা মাত্র ৫০ পয়সায় পিষে দিতেন এবং নিজে হাতে প্রায় ৬০ বিঘা জমি চাষ করতেন। জলের জন্য ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে তাঁকে যেতে হত, পরে গ্রামে একটি পুকুর তৈরি হলে সেখান থেকেই জল আনতে শুরু করেন। রূপা দেবীর ছেলে রামলাল জানান, তাঁর মা প্রথম থেকেই ভোর ৪টায় ঘুম থেকে ওঠেন। অতঃপর স্নান সেরে মালা জপ করে দিন শুরু করেন। এরপর দুধ পান করে এবং দুপুর ১২ বা ১টায় বাজরার রুটি এবং সবজি, রাবড়ি এবং ঘোল খান। রাত ৮টায় তিনি ডিনার সারেন খিচুড়ি ও দুধ দিয়ে।
রামলাল আরও বলেন যে তাঁর পুরো পরিবারই কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। তাঁর পরিবারের সকল সদস্যই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাষের কাজে ব্যস্ত থাকেন। একই সঙ্গে নতুন প্রজন্মের সদস্যরা গাড়ি চালিয়ে কিছু বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এছাড়া তাঁদের বাড়িতে গরু-মহিষ সহ অন্যান্য গৃহপালিত পশু রয়েছে। গ্রামে এই পরিবারের প্রায় ৯ থেকে ১০টি বাড়ি রয়েছে। তাঁদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১০০ জনেরও বেশি।
আরও পড়ুন: সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হওয়ার নিখুঁত অভিনয় করে পোষ্য সারমেয় বরখা! তার কাণ্ড শুনে চমকে যাবেন
রূপা দেবীর কনিষ্ঠ পুত্রের নাম রামলালের বয়স ৬০ বছর। তিনি জানান, রূপা দেবীর ছয় ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। যাঁদের মধ্যে এখন চার ছেলে ও এক মেয়ে বর্তমান। তাঁদের পরিবার গ্রামের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত, পরিবারের সদস্য সংখ্যা শতাধিক।
