মুর্শিদাবাদের সুতির বেসরকারি আবাসিক স্কুল থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে সোমবার সকালে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। সুতির মহেসাইল সংলগ্ন বেসরকারি স্কুলের ঘটনা। মৃত ছাত্রীর নাম আফসানা খাতুন(১৬)। তার বাড়ি মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার আকুম্বা এলাকায়। ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছেন মৃত ছাত্রীর পরিবারের লোকজন। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, আফসানা মানসিক অবসাদে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে সুতি থানার পুলিশ। বছর খানেক আগে ওই স্কুলের নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল আফসানা খাতুন।
advertisement
আরও পড়ুন: বাড়িওয়ালা তুলে দিয়েছিল, সেই রাগে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল ভাড়াটে!
মৃত ছাত্রীর আত্মীয় মনিরুল শেখ দাবি করেন, শনিবার রাতে স্কুল থেকে ওই ছাত্রীর মাকে ফোন করে বলা হয় মেয়ে নাকি উল্টোপাল্টা কথা বলেছে। অভিযোগ, এই কথা শুনে আফসানার সঙ্গে তার মা কথা বলতে চাইলেও ফোন না দিয়ে মুখের উপর কেটে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর আবার ফোন করে বলা হয়, আপনাদের মেয়ে অসুস্থ। তখনও আবার মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আগের মতোই কথা বলতে দেওয়া হয়নি। ওই আত্মীয়ের দাবি, এর কিছুক্ষণ পরই স্কুল থেকে ফোন করে বলা হয় তাদের মেয়ে মারা গিয়েছে। মৃত ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, আফসানার মৃত্যু নিয়ে রহস্য আছে। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন।
এদিকে ওই ছাত্রীর ঠাকুমা অভিযোগ করেন, "আমার নাতনি মাঝেমধ্যেই বলত স্কুলের প্রিন্সিপাল মাঝেমধ্যেই টর্চার করত।" তিনি দাবি করেন, "স্কুলের পক্ষ থেকে প্রথমে ফোন করে বলা হয়েছিল, আমাদের বাড়ির মেয়ে নাকি সিটি বাজিয়েছে এবং প্রিন্সিপালকে নাকি কটু কথা বলেছিল। তখন ওর মা বলেছিল, মেয়েকে ফোনটা দিন, ওকে শাসন করি। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ একবারও মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেয়নি।" ওই স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা বলে সন্ধে সাড়ে সাতটা বেজে গিয়েছে, তাই আর কথা বলতে দেওয়া যাবে না।
মাত্র ৬ দিন আগে আফসানা ছুটি কাটিয়ে বাড়ি থেকে স্কুলে ফিরে গিয়েছিল। মৃত্যুর আগের দিনও তার সঙ্গে কথা হয়েছিল বাড়ির লোকের। আবদার করে সে অ্যালার্ম ঘড়ি ও শীতের জন্য কম্বল চেয়েছিল। কিন্তু তা আর কিনে দেওয়ার সময়ই পেল না পরিবারের সদস্যরা।
মেয়ের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত দাবি করে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে আফসানার পরিবার। পুলিশ স্কুল থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় মালদহ ও মুর্শিদাবাদজুড়ে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা সরকারি অনুমোদনহীন মিশন স্কুলগুলির ভূমিকা ফের একবার আতস কাঁচের তলায় চলে এল।
কৌশিক অধিকারী