সেই সময় এলাকা ঘন অরণ্যে ঘেরা থাকলেও, কালের নিয়মে আজ এই এলাকা ঘনবসতিতে রূপান্তর হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজও কান্দীর সিদ্ধান্ত পরিবারের এই রটন্তী কালী পূজা হয়ে আসছে মহা সারম্বরের সঙ্গে।
'রটনা' শব্দ থেকে 'রটন্তী' শব্দটি এসেছে। মাঘ মাসের কৃষ্ণচতুর্দশীকে 'রটন্তী চতুর্দশী' বলা হয়৷ আর এই তিথিতে শ্রীকৃষ্ণ ও কালীর মিশ্ররূপে যে নতুন বিগ্রহপুজোর সূচনা রাধার হাতে হয় বলে কথিত আছে। তিথির নামে দেবীও পেলেন নতুন নাম, 'রটন্তী কালী'। নামে যেন বোঝানো হতে লাগল যে, এই দেবী 'রটনা' অর্থাৎ কলঙ্কনাশিনী দেবী। রাধার প্রেম-কলঙ্ক ভঞ্জনের প্রার্থনা আপামর মানুষের কাছে সামাজিক যে-কোন রকমের অপবাদ-নিন্দা-কলঙ্ক থেকে দূরে রাখার প্রার্থনা হয়ে ওঠে।
advertisement
আরও পড়ুন : অর্থ বরাদ্দ করল স্বাস্থ্য দফতর, শুরু হতে চলেছে কালনা হাসপাতালে সৌন্দর্যায়নের কাজ
নিশিরাতে রাতভোর ধরে চলে এই কালীপুজো। এই পুজায় বিশেষত্ব হচ্ছে, দেবী মুণ্ডমালিনীকে এখানে পালো পিঠে এবং খেড়োর তরকারি দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়। শীতকালীন বেশ কিছু অসময়ের সব্জী দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন : Pundibari Gang Rape: পুন্ডিবাড়ি গণধর্ষণ কাণ্ডে নয়া মোড়! চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে
রটন্তী কালী পুজোতে বলিদানের রীতি রয়েছে। এবং এখানে দেবীকে তন্ত্রমতে পূজা করা হয়। একরাত্রি পুজোর পর পরের দিন সকালে স্থানীয় এক পুকুরে প্রতিমা নিরঞ্জন এর মাধ্যমে আবারও এক বছরের অপেক্ষায় থাকেন সিদ্ধান্ত পরিবারের সদস্যরা।
শুধু সিদ্ধান্ত পরিবারই নয় এই রটন্তী কালীপুজোয় ছাতিতাকান্দি গ্রামবাসীরা আবেগ ওত প্রোতভাবে জড়িত রয়েছে এবং এই পুজো আজও কান্দির ঐতিহ্য ধারাবাহিকভাবে বহন করে চলেছে। পুজো দিতে বহু দুর দুরন্ত থেকে ভক্তরা আসেন এবং নিজের মনস্কামনা নিয়ে পুজো দেন।
কৌশিক অধিকারী