মন্দিরের সেবায়েতরা জানালেন, হাজার বছর আগে বল্লাল সেনের আমলে উত্তর পূর্ব ভারত থেকে আগত এক সন্ন্যাসী নদী পথে যাওযার সময় এখানে বসে তপস্যা করেছিলেন। তপস্যা চলাকালীন বিভিন্ন রূপে তাঁর ধ্যান ভঙ্গ করতে উদ্যত হন আসুরিক শক্তি গণ। এতে ক্রোধান্বিত হয়ে মা দক্ষিণা কালী ব্যাঘ্ররূপে দেখা দেন। তখন থেকেই এখানে ব্যাঘ্র রূপে মা দক্ষিণাকালীর পূজো হয়ে আসছে।
advertisement
প্রতিবছরই এই মন্দিরে ধুম ধামের করে মা দক্ষিণা কালীর পুজো হয়ে থাকে। পাশাপাশি সারবছরই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পুজো হয়। সারা বছর যাতে ভালো কাটে তার জন্য বছরের প্রথম দিনে সকাল থেকেই পূজো দিতে ভিড় করেছিলেন ভক্তরা। আবার এই মন্দির নিয়ে অন্য গল্পও প্রচলিত আছে। কেউ কেউ বলেন এক সিদ্ধ পুরুষ তপস্যায় বসে মাকে দেখতে পান। তখন মা তাঁকে মনোবাসনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি অন্ধ। অন্ধত্ব দূর করতে কোনও কিছুর ব্যবস্থা করুন।
সেই বিশ্বাস থেকে মানুষ এখানে আসেন এবং এই পুকুরে স্নান করে গাছের শিকড় নেন অন্ধত্ব দুর করার বাসনায়। মন্দিরে পাশের পুকুরের জল কখনো পরিবর্তন করা হয় না। কারও মতে একবার জল পরিবর্তন কালে পুকুরের মাটি ফেটে গিয়েছিল সেই থেকে এই পুকুরে জল এক ভাবে রাখা আছে। নিয়ম নিষ্ঠা ও আচার মেনেই ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের পুজো হয় আজও।
আরও পড়ুন: দাউ দাউ করে জ্বলে গেল এতগুলো বাড়ি! দায়ী মশার কয়েল? মর্মান্তিক ঘটনা মুর্শিদাবাদে
পাশাপাশি বাংলাদেশের মঙ্গল শোভাযাত্রা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে বহরমপুর মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। বিগত ২০১৮ সাল থেকে প্রতি বছর এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হচ্ছে বাঙালির পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে। আজও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। যদিও গত ২ বছর করোনা মহামারীর কারণে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তাই বাংলা ১৪৩০ সালের এই পয়লা বৈশাখ পালন করা হচ্ছে রীতিমতো আড়ম্বরের সাথে। শনিবার সকালে এই শোভাযাত্রা পরিক্রমা করে সারা বহরমপুর শহর। এদিন বহরমপুর মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে শহরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী-সহ বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। বাংলা বছরের প্রথম দিনে আপামর জনসাধারণের মঙ্গল কামনা করে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
কৌশিক অধিকারী