শুক্রবার আলম রহমান মোবাইলের মাধ্যমেই জানতে পেরেছে সে স্কুলের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে । মুর্শিদাবাদের শেষ সীমান্তে বীরভূম লাগোয়া ময়ূরাক্ষী নদীর কোল ঘেষে বৈদ্যনাথপুর গ্রামে আলমের বাড়ি । এখান থেকেই তিন কিলোমিটার দূরে গড্ডা গণপতি আদর্শপীঠে স্কুল করতে যেতে বাবার সাইকেলই ছিল একমাত্র ভরসা । দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সংসার মহম্মদ ফিরোজের । ছেলে আলম জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন কিন্তু কোনো লাভ হয়নি । বাড়িতে ছোট মুদিখানার দোকানের উপর নির্ভর সংসার । এরই মধ্যে নিয়ম করে ছেলের পড়াশোনার জন্য সাইকেল করে স্কুলে দিয়ে আসতেন । বৈদ্যনাথপুর গ্রামেই দু’জন শিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করত আলম ।
advertisement
আরও পড়ুন : বাবা নিখোঁজ সান্দাকফুতে, মাধ্যমিকের রেজাল্ট হাতে কেঁদেই চলেছে অস্মিতা
আরও পড়ুন : বীমাকর্মী বাবার সামান্য উপার্জনই ভরসা, মেধাবী অপূর্ব মাধ্যমিকে সপ্তম
ভাল রেজাল্টের খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন ভিড় করেছে এক টুকরো ইটের দেওয়াল দেওয়া বাড়িতে । হাত দুটো পোলিও আক্রান্ত হওয়ায় পায়ের মাধ্যমেই সে ছোট বয়স থেকে লেখে । বাবা মহম্মদ ফিরোজ বলেন, ‘‘খুবই অভাবের সংসার৷ তার মধ্যে ছেলেটাকে মানুষ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি । ও খুব মেধাবী, তার জন্যই লড়াই ।’’ শিক্ষক ইমরান হোসেন বলেন, ‘‘ও খুব মেধাবী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে যে ও এত ভাল নম্বর পাবে, তা ভাবতে পারিনি । আমরা সব সময় ওর পাশে রয়েছি ।’’ ভাল ভাবে কথাও বলতে পারে না আলম রহমান। লিখে জানায়, ‘‘আমি শিক্ষক হতে চাই, ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে পড়াব। ’’