বিপ্লবীদের আত্ম বলিদান ও বিদ্রোহের কারণে ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নেয় দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার। তবে ভারত ছাড়ার আগে তারা দেশ বিভাজনের সিদ্ধান্ত নেয়। স্যার র্যাডক্লিফ কমিশন বানিয়ে ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের দায়িত্ব নেন। সেই বিভাজনের নিরিখে নদিয়ার শুধুমাত্র নবদ্বীপের অংশটুকু ভারতবর্ষের অধীনে থাকে। শিবনিবাস সহ কৃষ্ণনগর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ( বর্তমান বাংলাদেশ) মধ্যে পড়ে যায়। মুসলিম লীগ ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ সালে কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করে। তারপর নদিয়ার অধিকাংশ মানুষের অসন্তোষে চিন্তায় ফেলে ব্রিটিশ সরকারকে। ব্রিটিশ সরকার তার ভুল বুঝতে পেরে ১৭ আগস্ট ১৯৪৭ সালে একটি সংশোধনী এনে ঘোষণা করেন। ওই সংশোধনীতে বলা হয় চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া এবং মেহেরপুর পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কৃষ্ণনগর, শিবনিবাস এবং রানাঘাট ভারতবর্ষের অন্তর্ভুক্ত হবে। ওই সংশোধনের পরে ১৮ আগস্ট কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে ভারতবর্ষের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
advertisement
যদিও বর্তমানে সেটি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে না দেখে দিনটিকে ভারতভুক্তি দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সেই কারণেই ১৮ আগস্ট দিনটি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শিবনিবাস মন্দির প্রাঙ্গণে এখনও পতাকা উত্তোলন করে কিছু মানুষ। এছাড়াও করা হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো মহিলাদের চূর্ণী নদীতে নৌকা প্রতিযোগিতা। তবে কোভিড মহামারীর কারণে গত দু'বছর ধরে সেই অনুষ্ঠান অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে জানা গেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে। তবে প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছরও ১৮ আগস্ট ভারতভুক্তি দিবস হিসেবে পতাকা তোলা হবে মন্দির চত্বরে।