১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ই নভেম্বর অবিভক্ত মেদিনীপুরের (বর্তমান, পূর্ব মেদিনীপুর) নন্দীগ্রাম থানার জাহানাবাদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন হরিপদ বাবু। কিশোর বয়সে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে। পরবর্তী সময়ে, তাঁর সৃষ্টি ও সাহিত্য চর্চা বঙ্গবাসী তথা অবিভক্ত মেদিনীপুর\'কে সমৃদ্ধ করেছে। ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল (হেরিটেজ) এর শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক রূপে তিনি কর্মজীবন সম্পন্ন করেন। ১৯৬৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের। ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক হলেও, বাংলা ও হিন্দি ভাষায় অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন। সাহিত্য, বিজ্ঞান, সমাজ ও ইতিহাস বিষয়ে রচিত তাঁর গ্রন্থগুলি অন্যতম সম্পদ। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি বাঙালি দার্শনিক ব্রজেন্দ্রনাথ শীল সম্পর্কিত বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় রচিত বই। অবিভক্ত মেদিনীপুরের অন্যতম সমাজ ও ইতিহাস গবেষক অরিন্দম ভৌমিক জানালেন, \"হরিপদ বাবু অবিভক্ত মেদিনীপুরের গর্ব ছিলেন। তার সৃষ্টি, সংগ্রাম ও কর্মজীবন আমাদের মুগ্ধ করে।
advertisement
মেদিনীপুরকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। তবে, দার্শনিক ব্রজেন্দ্রনাথ শীল\'কে নিয়ে রচিত বই আমার মতে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ, যা তিনি মাইসোরে গিয়ে নিজের হাতে তুলে দিয়ে এসেছিলেন মাইসোর ইউনিভার্সিটির Vice Chancellor বা উপাচার্যের হাতে। এই মহীশূর বিদ্যালয়ের এক সময় উপাচার্য ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরও অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজনেষু \'বহুবিদ্যা বিশারদ\' ব্রজেন্দ্রনাথ শীল।\" হরিপদ বাবুর রচিত বই মাইসোর ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ও অধ্যাপকদের এতোটাই মুগ্ধ করেছিল যে, তাঁরা তৎক্ষণাৎ হরিপদ বাবুর হাতে শংসাপত্র তুলে দিয়েছিলেন। জানালেন সেই মুহূর্তের সাক্ষী অরিন্দম ভৌমিক। এহেন শিক্ষাবিদের প্রয়াণে শোকে মুহ্যমান অবিভক্ত মেদিনীপুরের এক বিস্তীর্ণ অংশ! বিশ্বস্ত সূত্রে এও জানা গেছে, মাত্র ৪-৫ দিন আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকাল প্রয়াণ হয়েছে হরিপদ বাবু\'র পুত্রেরও!