উত্তরটা জটিল তো বটেই! চিকিৎসাবিজ্ঞানের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরা হয় তো এর উত্তর দিতে পারবেন সহজেই! কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে তা চট করে বলে দেওয়া সম্ভব নয়। আর ঠিক এই জায়গা থেকে প্রতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে উদযাপিত হয়ে থাকে World Cancer Day বা বিশ্ব কর্কট দিবস। উদ্দেশ্য একটাই- এই ব্যাধি সম্পর্কে যত দূর সম্ভব সবাইকে সচেতন করে তোলা!
advertisement
আসলে ক্যানসার সম্পর্কে আমাদের সমাজে এখনও অনেক ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। তার মধ্যে প্রথমটা হল এই যে একবার ক্যানসার হলে রোগীর নিয়তি শুধু মৃত্যু, তা আর সারে না। এই বিশ্বাস রোগী এবং তাঁর পরিবারের মনোবল ভেঙে দেয়, সেখানেই অর্ধেক লড়াই হেরে বসে থাকি আমরা। কিন্তু একেবারে প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে ক্যানসারের নিরাময় সম্ভব, এটা এখন বিজ্ঞানসম্মত সত্য। এই সব দিক সম্পর্কে আমাদের সচেতন করে তোলাই এই দিনটির তাৎপর্য। সেই লক্ষ্যে প্রতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা সংগঠনের তরফে মিছিল করা হয়, সেমিনার ডাকা হয়, ক্যানসার রোগীদের মনোবল ফেরাতে এবং চিকিৎসার খরচ তুলতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজনও হয়ে থাকে।
প্রতি বছরে বিশ্ব কর্কট দিবসের থিম বদলে যায়। সেই কথায় আসার আগে একটু এই দিনটির ইতিহাস জেনে না নিলেই নয়!
১. ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোল বা UICC প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। তাদের উদ্যোগেই ২০০৩ সাল থেকে উদযাপিত হয়ে আসছে World Cancer Day।
২. এর পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO এই সংগঠনের পাশে এসে দাঁড়ায়। যুক্ত হয় বিশ্বের আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।
৩. প্যারিসে প্রথম বিশ্বসভা আহ্বান করা হয়েছিল এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে।
৪. প্যারিসের সভায় বিশ্বের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তরফে ১০টি অধ্যায়-সম্বলিত একটি অনুচ্ছেদ লিপিবদ্ধ করা হয়। যাতে লেখা ছিল কী ভাবে জনৈক ক্যানসার-রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করা হবে। একে বলা হয় Charter of Paris Against Cancer।
এই বছরে বিশ্ব কর্কট দিবসের থিম I Am and I Will। বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না যে সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে এবং এই রোগ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে জনৈক ব্যক্তির ভূমিকার উপরে গুরুত্ব আরোপ করছে চলতি বছর। নিজেরা সচেতন হলে তবেই যে অন্যকে সচেতন করা যায় এবং সমাজে সদর্থক পরিবর্তন নিয়ে আসা যায়- এর চেয়ে বড় সত্য আর কী হতে পারে!
Written By: Anirban Chaudhury