দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৬ ঘন্টাই কর্মব্যস্ততার মধ্যে কাটে তাঁর। বিদ্যালয়ের অতিথি শিক্ষক,নিজের নাচের স্কুল এবং ভালবেসে নাটকের মঞ্চে অভিনয়ে সময় কেটে যায় কোয়েলের। এখন ৪০ বছরেও এসে শুনতে হয় তাকে সে নাকি কালো বলেই তার কপালপোড়া। তবে একথা কিন্তু কোয়েল কখনওই ভাবেন না । বরং তার কাছে এটা লড়াই। লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই তিনি খুঁজে পেয়েছেন জীবনের আলো।
advertisement
কোয়েলের ১০ বছর বয়সি একটি ছেলে রয়েছে। তার জন্যই সে জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত লড়াই করে চলেছেন । কোয়েলের বাবা প্রদীপ মিত্র সারা জীবন সমাজসেবা করছেন । এক বছর আগেই তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। মা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। কোয়েল নিজে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর। নাচেও ডিপ্লোমা করেছেন। ঝাড়গ্রাম শহরের বুকেই একটি বড় নাচের স্কুল চালান কোয়েল। রানি বিনোদ মঞ্জরী রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষিকা। ওই স্কুলের ছাত্রীদেরও নাচ শেখান।
ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন কোয়েল। কিন্তু বিয়ে টিকল না বেশি দিন। দেড় বছরের ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে মা বাবার কাছে চলে এসেছিলেন কোয়েল । ৯ বছর ধরে বাবার বাড়িতেই রয়েছেন কোয়েল। বাড়িতে এখন মা,ছেলে,ভাই রয়েছে। স্কুলের অতিথি শিক্ষিকা এবং নাচের স্কুল থেকে যা উপার্জন করেন, সেই দিয়েই পুরো সংসার চালাচ্ছেন কোয়েল।
আরও পড়ুন : আটা, ডিম, দারচিনি…ঘরোয়া উপকরণে বাড়িতেই বানান গাজরের কেক! হাজির সহজ রেসিপি
কলকাতার রবীন্দ্র সদনের মতো একাধিক মঞ্চে নাচের অনুষ্ঠান করার সুযোগ হয়েছে তাঁর। সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও ডাক পান কোয়েল। বর্তমানে এখন তাঁর নিজের পরিচয় হয়েছে। কারও স্ত্রী হিসেবে নয়, ঝাড়গ্রাম-সহ কলকাতার বহু মানুষ ‘কোয়েল’ নামেই চেনে তাঁকে। সম্প্রতি ২০২২ সালে পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এর সঙ্গে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য কোয়েল ‘রক্তপলাশ” ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেন। বর্তমানে কোয়েল এখন একজন নৃত্যশিল্পী নিজের নাচের স্কুলে এখন প্রায় ৪৫০-রও বেশি ছাত্রীদের নাচ শেখান। কোয়েল তাঁর অদম্য চেষ্টায় বদলে ফেলেছেন তাঁর নিজের ভাগ্য।