এর আগে এই স্থানে সেভাবে কেউ পৌঁছায় নি। নামটিও অদ্ভুত। ‘হাতি পাথর’ নদী, জঙ্গল ও পাহাড়ের মাঝে একটি ছোট্ট ডুংরি। শোনা যায় কয়েক বছর আগে এখানে হাতির পাল জল খেতে আসত। হাতির মত চেহারার শিলা দেখা যায় বলে এর নাম হয়েছে ‘হাতি পাথর’। এখানেই পূজিত হন হাতিমারা দেবতা। প্রাচীন কালের অসংখ্য ছোট-বড় পাথরের টিলা দেখা যায়। ভরা বর্ষায় চারিদিকে সবুজের মাঝে এই টিলার অপরূপ সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। এই ডুংরিতে পৌঁছাতে গেলে, গাইড ছাড়া আপনি যেতে পারবেন না। আর যদি কোনও রকমে যান নির্ঘাত পথ হারিয়ে যাবেন। নেই নির্দিষ্ট পথ। ঘন জঙ্গল আর পাথরকে সঙ্গী করেই এগিয়ে যেতে হবে। ঘাঘরা থেকে মাত্র ২৫০ মিটার দূরে রয়েছে স্থানটি। বেলপাহাড়িতে যেসব পাহাড় গুলোর পুজো করা হয়, তাদের সবার শেষে হয় ‘হাতিমারা’র পুজো।
advertisement
আর এই পাহাড়ের পুজো দেখতে ভিড় জমান বাংলা ছাড়াও ভিন রাজ্যের বাসিন্দারা। বেলপাহাড়ি যেন পাহাড়, ডুংরি, ঝর্ণার ক্যানভাসে আঁকা ছবি। ঝর্ণার জল, পাখির কলরব, পাহাড়-ডুংরির কোলে পড়ন্ত সূর্যের মায়াবী রূপ পর্যটকদের বারবার টানে। বর্ষার মৌসুমে এলেই কেবল বেলপাহাড়িকে উপভোগ করা সম্ভব। পাথরের বুকে জল ঝরে পড়ার দৃশ্য নেশা ধরিয়ে দেয়। পাথরের গায়ে ধাক্কা দিতে দিতে চলেছে দিয়ে নদীর জল। পড়ন্ত বিকেলে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে সূর্য উঁকি মারছে পশ্চিম আকাশে। সেই সময়ে শাল মহুয়ার জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে যাওয়ার পথে অভাবনীয় একাধিক প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাক্ষী। সব মিলিয়ে, এই বর্ষায় বেলপাহাড়ি দু’হাত বাড়িয়ে ডাকছে আপনাকে। আর সেই টানেই পর্যটকেরাও বারবার ফিরে আসে বেলপাহাড়িতে।
আরও পড়ুন: ভুলে যান দিঘা-মন্দারমণি! বর্ষায় ঘুরে আসুন ঝাড়গ্রামের কুঠিঘাট, কোলাহলমুক্ত পরিবেশে হৃদয় জুড়োবে!
কি ভাবে পৌঁছবেন? সড়কপথে কলকাতা থেকে বেলপাহাড়ির দূরত্ব ২০০ কিলোমিটারের মত। কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রাম হয়ে বেলপাহাড়ি যেতে পারেন বিভিন্ন জায়গা ঘুরতে ঘুরতে। ঝাড়গ্রাম স্টেশনে এসে সেখান থেকেই গাড়ি ভাড়া করে বেলপাহাড়ি যেতে পারেন। কলকাতা থেকেও বেলপাহাড়ির বাস পাওয়া যায়। বেলপাহাড়িতে একাধিক হোটেল, হোম স্টে রয়েছে সেখানে থাকতে পারেন। কলকাতা থেকে ট্রেনে ঝাড়গ্রাম। সেখান থেকে ৪০ কিমি বেলপাহাড়ি। আর বেলপাহাড়ি থেকে ৭ কিমি ঘাগরা। আর ঘাগরা থেকে মাত্র ২৫০ মিটার দূরে রয়েছে স্থানটি।
তন্ময় নন্দী