অনেকেই নিশ্চয়ই শুনেছেন যে বাঁধাকপিতে এক ধরনের মাইক্রোস্কপিক কৃমি থাকে এবং এটি মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে। এই ভয়ে প্রায় হাজার হাজার মানুষ বর্তমানে বাঁধাকপি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। সেই কৃমি কী এবং কী ভাবে এটি মস্তিষ্কে প্রবেশ করে সে বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক এক এক করে।
advertisement
বাঁধাকপিকে ইংরেজিতে বলা হয় ক্যাবেজ (Cabbage) আর ফুলকপিকে বলা হয় কলিফ্লাওয়ার (Cauliflower)। তবে বাঁধাকপি এবং ফুলকপি কিন্তু একই প্রজাতির সবজি। বাঁধাকপিতে যে কৃমি থাকে সেটিকে টেপওয়ার্ম বা ফিতাকৃমি বলে। অন্ত্রে প্রবেশ করার পর, এই টেপওয়ার্ম রক্ত প্রবাহের সঙ্গে শরীরের এবং মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশে পৌঁছাতে পারে। এটি খুবই ছোট আকৃতির হয় যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। এই সবজিটি সেদ্ধ করে সঠিকভাবে রান্না করতে পারলে কিন্তু বিপদ অনেকটাই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। সাধারণত এই ধরণের কৃমি প্রাণীর মলে পাওয়া যায়।
বৃষ্টির জল বা অন্য কোনও কারণে ফিতাকৃমি মাটিতে পৌঁছায় এবং তার পর কাঁচা সবজির মাধ্যমে আমাদের শরীরে ঢোকে। পাকস্থলীতে পৌঁছনোর পর, এই কৃমি প্রথমে অন্ত্রে, তার পর শিরার মাধ্যমে রক্ত প্রবাহের সাহায্যে মস্তিষ্কে পৌঁছায়। এর লার্ভা আমাদের মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত করে।
টেপওয়ার্ম দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণকে টেনিয়াসিস (Taeniasis) বলে। শরীরে প্রবেশের পর এই কৃমি ডিম পাড়ে। যার কারণে শরীরের ভিতরে ক্ষত তৈরি হতে থাকে। এই পোকার তিনটি প্রজাতি রয়েছে (১) Taenia seginata, (২) Taenia solium এবং (৩) Taenia Asiatica। এটি লিভারে পৌঁছে একটি সিস্ট তৈরি করে, যা থেকে পুঁজ তৈরি হয়।
আরও পড়ুন-বিয়েতে কনের নাচের গান পছন্দ হয়নি, তাতেই তালাক দিলেন সদ্য বিবাহিত স্বামী!
এই কৃমি আমাদের পেটের খাবারকে তাদের খাদ্য বানিয়ে নেয়। যা থেকে ব্যক্তির শরীরে খিঁচুনি হতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে এর কোনও উপসর্গ নেই। কিন্তু মাথাব্যথা, ক্লান্তি, ভিটামিনের অভাবের মতো উপসর্গ দেখা যায়। মস্তিষ্কে এর চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয়। কৃমি থেকে বাঁচতে চিকিৎসকরা বলেন, যে সব জিনিসে এই কৃমি পাওয়া যায়, সেগুলো ভালো করে রান্না করে খাওয়া উচিত। বর্তমানে প্রায় ১.২ মিলিয়ন মানুষ নিউরোসিস্টিসারকোসিস (Neurocysticercosis), অর্থাৎ এই ভাবে লার্ভার মাধ্যমে সিস্ট হওয়ার সমস্যায় ভুগছেন, যা মৃগীরোগের অন্যতম প্রধান কারণ। তাই আমাদের খাবার রান্না করার সময় সতর্ক থাকা উচিত!