কীভাবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এড়ানো সম্ভব?
যেমনটা বলা হয়েছে যে, প্রি-ডায়াবেটিস হল ডায়াবেটিসের একটি সূচক এবং প্রাথমিক লক্ষণ, তাই ব্যক্তির প্রি-ডায়াবেটিস ধরা পড়লে রক্তে শর্করার মাত্রা কমানোর জন্য তাঁকে সচেতন পদক্ষেপ নিতে হবে।
আজ আমরা তেমনই ১৮টি জীবনযাত্রার পরিবর্তনের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব যা প্রি-ডায়াবেটিস পর্বে বিশেষ সহায়ক-
advertisement
দৈনিক ব্যায়াম
রুটিনে ব্যায়ামের অভাব ইনসুলিন প্রতিরোধের কারণ হতে পারে। ইনসুলিন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে, আমাদের দেহকে আমাদের সেল এবং ব্লাড থেকে সুগার অপসারণের জন্য আরও বেশি ইনসুলিন তৈরি করতে হবে।
অন্যান্য পানীয়ের পরিবর্তে সাধারণ জল পান
বেশিরভাগ পানীয়, তা গরম হোক বা ঠান্ডা প্রায়শই সেগুলি প্রচুর পরিমাণে চিনি যোগ করে তৈরি করা হয়। সে ক্ষেত্রে পানীয় হিসাবে সাধারণ জল বেছে নেওয়াই উপকারী।
আরও পড়ুন : হোটেলের ঘর সত্যিই আদৌ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কিনা, বেড়াতে গেলে পরীক্ষা করে নিন প্রথমেই
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
অতিরিক্ত ওজনের কারণে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। স্থূলতা ইনসুলিন প্রতিরোধের কারণ হতে পারে। স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ বার ব্যায়াম করে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা উচিত।
সঠিক খাওয়া
এটি এমন কোনও আশ্চর্যের বিষয় নয় যে স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তমবে, সঙ্গে আরও অনেক সুবিধা পাবে শরীর। আমাদের খাদ্যতালিকায় প্রচুর সবজি, ফলমূল, গোটা শস্য, মুরগির মাংস ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
কম কার্বোহাইড্রেড গ্রহণ
আমাদের শরীরকে কার্বোহাইড্রেট হজম করানোর জন্য সেগুলিকে ছোট ছোট শর্করার উপাদানে রূপান্তরিত করতে হবে। এর জন্য কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমাতে হবে। না হলে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন : রেশমি জমিনে চুমকির বুনোটে বোনা লেহঙ্গা পরনে রাজস্থানি কেল্লায়, সচিনকন্যা সারা যেন রূপকথার রাজকুমারি
বেশি করে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি ইনসুলিন প্রতিরোধের সঙ্গে যুক্ত। ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা হ্রাসের কারণে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হতে পারে। এর জন্য আমাদের ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত।
অল্প অল্প করে খাওয়া
আমরা যখন খাই তখন আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। একবারে প্রচুর পরিমাণে খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে যা পরবর্তীতে অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী ব্যাধি সৃষ্টি করে।
রেড মিট না খাওয়া
বেশিরভাগ রেড মিট টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এর জন্য অবশ্যই উচ্চ প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
আরও পড়ুন :
ধূমপান না করা
ধূমপান আমাদের শরীরে বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ধূমপানও ইনসুলিন প্রতিরোধের সৃষ্টি করে যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়।
বেশিক্ষণ এক অবস্থানে না থাকা
খারাপ হার্টের স্বাস্থ্য মানেই টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি। দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থানে থাকা শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে প্রভাবিত করে।
অ্যালকোহল সেবন না করা
অ্যালকোহল পরিমিতভাবে সেবন না করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। অ্যালকোহল স্থূলতা সৃষ্টি করে, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়, মেজাজ খারাপ করে ইত্যাদি সমস্যা তৈরি করে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা
খারাপ হার্টের স্বাস্থ্য টাইপ-২ ডায়াবেটিসে সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। উচ্চ রক্তচাপ টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সঙ্গে যুক্ত। রক্তচাপ বাড়ায় এমন খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া
দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের হরমোনের মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। আমাদের হরমোনের মাত্রার পরিবর্তন আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে বা বাড়াতে পারে।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাওয়া
খারাপ হার্টের স্বাস্থ্যের কারণে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থাকতে পারে। স্যাচুরেটেড অস্বাস্থ্যকর চর্বির বিপরীতে স্বাস্থ্যকর চর্বি আমাদের হৃদয়ের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
নুনের মাত্রা কমিয়ে দেওয়া
অত্যাধিক পরিমানে লবণ (সোডিয়াম) গ্রহণ রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
বেশি ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া
প্রি-ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডাইলুটেড ফাইবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। দ্রবণীয় ফাইবার জল শোষণ করে এবং আমাদের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণকে ধীর করতে সাহায্য করে। এটি খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি এড়াতেও সহায়তা করে।
জাঙ্ক এবং অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা
বেশিরভাগ জাঙ্ক এবং আল্ট্রা-প্রসেসড খাবারে প্রচুর পরিমাণে লবণ এবং চিনি থাকে, উভয়ই এগুলি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায় বলে প্রমাণিত হয়েছে।
বাড়িতে রান্না করা খাওয়া
প্রিজারভেটিভ, উচ্চ শর্করা এবং উচ্চ লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম উপায় হল বাড়ির খাবার খাওয়া।