তুহিনার শেয়ার করা প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে সঙ্গীত পরিচালক অনিল বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে গান রেকর্ড করছেন লতা৷ সেই ছবি সম্পর্কে তুহিনা লিখেছেন, ছবিটা তাঁর দাদু অনিল বিশ্বাস এবং প্রবাদপ্রতিম শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের৷ নেটিজেনদের তুহিনা ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন নস্টালজিক সাদাকালো যুগে৷ বলেছেন, অনিল বিশ্বাস ছিলেন লতার মেন্টর৷ লতাকে শিখিয়েছিলেন শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের নানাবিধ কলাকৌশল৷ পরামর্শ দিয়েছিলেন, গানের মধ্যে শব্দ না ভেঙে উচ্চারণ করতে৷
advertisement
প্রসঙ্গত বরিশালের ছেলে অনিল তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন কলকাতায়৷ তার পর পাড়ি মুম্বইয়ে৷ তিন ও চারের দশকে তিনি ছিলেন আরবসাগরের তীরে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির সঙ্গীত পরিচালক৷ তাঁরই দৌহিত্র হলেন টেলিভিশন অভিনেত্রী তুহিনা৷
আরও পড়ুন : ছায়াসঙ্গী ছিল ক্যামেরা, আলোকচিত্রী হিসেবেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন কিন্নরকণ্ঠী লতা
তিনি লিখেছেন, লতা মঙ্গেশকর ছিলেন একজন আলোকচিত্রী এবং ক্রিকেটপ্রেমী৷ গুরু-শিষ্যার পরম্পরাকে নিখুঁত বর্ণনা করেছেন তুহিনা অন্য একটি ছবিতে৷ সেখানে অনিল বিশ্বাস রান্না করছেন এবং লতা তাঁর পাশে বসে রয়েছেন৷ তুহিনা জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণ পর্বে তাঁর দাদুর বাড়িতে লতা আসতেন রেওয়াজ করতে৷ সে সময় তারদেও থেকে দাদার, দীর্ঘ পথ তিনি হেঁটে আসতেন৷ তাঁর জন্য আমিষ খাবার রেঁধে রাখতেন অনিল৷ কারণ তিনি জানতেন সে সময় তাঁর শিষ্যার সেই খাবার নিজের ব্যয়ে খাওয়ার মতো পরিস্থিতি বা সামর্থ্য ছিল না৷
আরও পড়ুন : সম্রাজ্ঞী হয়েও এই কারণেই উজ্জ্বল প্রসাধনী ছেড়ে আপন করেছিলেন সাদা শাড়িতে হিরের দ্যুতিকে
লতা মঙ্গেশকরের প্রতিভা যে কতটা অতলস্পর্শী, তার পরিচয় ফুটে উঠেছে তুহিনার আর এক স্মৃতিচারণায়৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘একবার তাঁরা দুজনে বাইরে কোথাও গিয়েছেন৷ সে সময় দাদুর মনে এটা মিউজিক পিস এল৷ তিনি শিষ্যাকে বললেন সেই মুহূর্তে তিনি যে সরস্বতী বন্দনার সুর দিয়েছেন, তার থেকে দু’টি পঙক্তি মনে মনে তৈরি করে রাখতে৷ তার পর সে গান সম্পূর্ণও হয়নি, রেকর্ডও হয়নি কোনওদিন৷’’
আরও পড়ুন : আম, জাফরান সুবাসিত গাজরের হালুয়া এবং আশা ভোঁসলের তৈরি শাম্মি কাবাব ছিল সুরসম্রাজ্ঞীর পছন্দের শীর্ষে
কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি সেই অধ্যায়৷ তুহিনা জানিয়েছেন, এই ঘটনার প্রায় ৬০ বছর পর যখন তাঁর মা অর্থাৎ আনিল বিশ্বাসের মেয়ে সাক্ষাৎ করেন লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে, তাঁকে দেখে শিল্পী বলেন যে তিনি শেষ বার ছোট্ট অনিলকন্যাকে দেখেছিলেন নীল জামা পরনে৷ এবং তার পরই গেয়ে উঠেছিলেন সেই অসমাপ্ত সরস্বতী বন্দনার দু’ লাইন, যা তিনি গুরুর মুখে একবারই শুনে মনের নোটেশন কুলুঙ্গিতে সযত্নে রেখে দিয়েছিলেন জীবনভর৷