ইতিহাস বলছে, এই পুজোর সূচনা হয়েছিল ১৪৬০ থেকে ১৪৭০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে। যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবা ঈশ্বরীগুপ্ত বসু এই পুজো শুরু করেন। পরবর্তীতে মাহিনগর থেকে বসু পরিবার বসিরহাটের দণ্ডিরহাটে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে ও জমিদারি গড়ে তোলে। সেই সময় থেকেই প্রথা মেনে চলে আসছে এই পুজো।
প্রথম থেকেই এই পুজোকে ‘কলারছড়া দুর্গাপুজো’ বলা হত না। প্রথা অনুযায়ী মহালয়ার আগে বাগবাজার ঘাট থেকে গঙ্গাজল আনার রীতি আজও অটুট। প্রতিপদের দিন ঘটে পূজা শুরু হয়, পঞ্চমী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিদিনই হয় পাঠা বলি। দেশ-বিদেশে থাকা পরিবারের সদস্যরা এই সময়ে একত্রিত হন, মিলিত হয় বসুবাড়ির নানা প্রজন্ম। ভোগ বিতরণ, পুজার্চনা আর ভক্তদের সমাগমে সরগরম হয়ে ওঠে সমগ্র দণ্ডিরহাট। ঠাকুরদালানের সামনের পুরনো বেলগাছ থেকে প্রতিবছর একটি জোড়া বেল দেবীর আরাধনায় উৎসর্গ করা হয়।
advertisement
অতীতে এই পুজোকে কেন্দ্র করে জমিদারবাড়িতে বসত বিশাল মেলা, চলত কালীপুজো পর্যন্ত। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যাত্রাপালা, ভুরিভোজে জমে উঠত উৎসব। জমিদারবাবুরাও যাত্রাপালায় অংশ নিতেন। যদিও আজ আর আগের সেই জাঁকজমক নেই, তবুও প্রথা আর ঐতিহ্যের আবহ আজও বিদ্যমান। ৫০০ বছর ধরে টিকে থাকা বসুবাড়ির এই দুর্গোৎসব শুধু এক বনেদি পরিবারের গৌরব নয়, বরং সামাজিক সম্প্রীতি, ইতিহাস ও সংস্কৃতির মিলনমঞ্চ।