কিন্তু সমস্যা শুধু এটুকু হলে তো সমাধান হাতেই ছিল। তেল থেকে শুরু করে নানা রকম লোশন, ক্রিম আরও কত কিছু। আমরা শীতকালে সে সব ব্যবহারও করে থাকি। আর তখনই সমস্যার দ্বিতীয় পর্যায়টা শুরু হয়। ক্রিম বা তেল এমনকী সানস্ক্রিন প্রয়োগের ফলেও ত্বকের ছিদ্রগুলিকে আটকে যেতে পারে। ফলে ত্বকের স্বাভাবিক শ্বসনে বাধা তৈরি হয়। এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া খুব দরকার।
advertisement
জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত
ফুসফুস যে ভাবে শ্বাস নেয়, ত্বকও যে ঠিক সেভাবেই শ্বাস নেয়, তা নয়। তবে রক্তের মাধ্যমেই অক্সিজেন বাহিত হয়। তার ফলে পুষ্টি পায় ত্বক। একের পর এক প্রসধন সামগ্রী ত্বকের উপর প্রলেপ দিলে ত্বকের উপরে থেকে রোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক হতে পারে। ব্রণ, শুষ্ক ত্বক, এমনকি বলি রেখার সমস্যাও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আরও পড়ুন: এবিসি (ABC) ড্রিঙ্ক বানাতে পারেন? হুড়মুড়িয়ে কমবে ওজন, লাগবে এই কয়েকটি জিনিস!
ত্বকের এই শ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া বিশ্রামের সময় ঘটলেই সব থেকে ভাল। এর ফলে, অর্থাৎ যখন ত্বকের উপরে থাকা রোমকূপের মুখগুলি খোলা অবস্থায় থাকে তখন তারা ত্বক পরিচর্যার যে কোনও সামগ্রী আরও বেশি ভাল করে শোষণ করতে পারে। তাতেই ভাল ফল পাওয়া যায়।
এর ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ মাত্রায় বজায় থাকে। অর্থাৎ অতিরিক্ত আর্দ্রতা বা শুষ্কতার কোনটিই ঘটে না।
মেক-আপ ব্যবহার করার ফলে যে ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে, তা থেকেও অনেকাংশে নিজেকে সুস্থ করে তুলতে পারে ত্বক।
তা হলে উপায়?
আর্দ্রতা বজায় রাখা: ত্বক পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি শরীরে জলের মাত্রা বজায় রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের উপর থেকে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে যেমন কোমল, উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া যায়, তেমনই ভিতর থেকে সুস্থ থাকাও জরুরি। এর জন্য পর্যাপ্ত জল পান প্রয়োজন। জল পানের ফলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
মেক-আপে না: অতিরিক্ত মেক-আপ করলে ত্বকের ক্ষতি হয়। অথচ, যাঁরা প্রতিদিন বাইরে বেরোন, তাঁদের কিছু না কিছু মেক-আপ করতেই হয়। তাই চেষ্টা করতে হবে, সপ্তাহে অন্তত এক দিন নিজের মুখে কোনও সামগ্রী ব্যবহার না করার। এমনকী সে দিন ক্রিম বা ত্বক চর্চার অন্য কোনও উপাদানও ব্যবহার করা উচিত নয়।
সংবেদনশীল ত্বক যাঁদের, মেক-আপ থেকে তাঁদের সমস্যা আরও বেশি হতে পারে। মেক-আপ পণ্যে উপস্থিত তেল এবং রাসায়নিক পদার্থ জমে রোমকূপের মুখ বন্ধ করে দাগ বা ব্রণ তৈরি করতে পারে। এমনকী মেক-আপ করার অভ্যাস কমিয়ে দিলে ত্বক পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে। কারণ যত ভাল ভাবেই মুখ পরিষ্কার করা হোক না কেন, অনিচ্ছাকৃত ভাবে হলেও মেক-আপের কিছু অংশ মুখে থেকে যেতেই পারে।
তাই সব থেকে ভাল হয় সপ্তাহে দু’একদিন মেক-আপ থেকে একেবারে দূরে থাকা।
পরিষ্কার ত্বক: যে কোনও মানুষের ত্বকের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য, স্থিতিস্থাপকতা এবং মসৃণতা নির্ভর করে তাঁর করা যত্নের উপর। ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল ব্যবহার করার পর মেক-আপ ভাল ভাবে পরিষ্কার করে ফেলা।
আরও পড়ুন: ছোট গলা ব্লাউজ খুঁজছেন? বিয়ে বাড়ি মাতাতে আপনার হাতে এখন দারুণ হাতিয়ার
এছাড়া, ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেও ত্বক ভাল ভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া দরকার। যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাঁদেরও শরীরচর্চার পর একবার মুখ ভাল করে ধুয়ে নেওয়া উচিত। কারণ ঘাম এবং ধুলো জমেও রোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এক্সফোলিয়েশন: ত্বকে জমাট বেঁধে থাকা ময়লা, তেলেতেল ভাব, শুষ্কতা এমনকী মেক-আপ থেকে মুক্তি পেতে প্রতি রাতে ত্বক পরিষ্কার করা জরুরি। তার বাইরেও প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার এক্সফোলিয়েশন প্রয়োজন। এতে ত্বকের উপরে জমা হওয়া মৃত কোষ সরে গিয়ে ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করবে।
সঠিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে গেলে মুখ ধোয়া এবং এক্সফোলিয়েশন খুবই জরুরি। তবে তার পাশাপাশি সুন্দর ত্বকের জন্য, পর্যাপ্ত পুষ্টিও প্রয়োজন। তাই সুষম খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ প্রয়োজন। ভিটামিনের ঘাটতিও ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।