বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গবেষক গৌতম চন্দ্র বলেন, " বর্ষা এবার দেরিতে এসেছে। পাশাপাশি দীর্ঘসময় তা স্থায়ী হয়েছে। বিরতি দিয়ে বৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে মশারা বংশবিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে গিয়েছে। এছাড়া নিম্ন চাপের কারণে কয়েকদিন অন্তর বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে পরিষ্কার জল বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকছে। বিশেষ করে শহর এলাকায় বাড়ির ভিতরে থাকা পরিত্যক্ত পাত্র, গাড়ির টায়ার, গাছের কৌটোর মতো জায়গায় জমে থাকা পরিষ্কার মিষ্টি জলে ডেঙ্গুর এডিস মশা বংশ বিস্তার করছে। অন্যত্র জমা জলে অন্যান্য মশার বংশবৃদ্ধি ঘটেছে। ডেঙ্গুর সংক্রমণ সাধারণত বর্ষাকালে (জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) বেশি হয়। কিন্তু এবার নভেম্বরে সংক্রমণ সর্বোচ্চ হয়েছে।"
advertisement
গৌতমবাবু জানান, " গত কয়েক বছরই দেরিতে বর্ষা শুরু হতে দেখা যাচ্ছে। ২০১৯ সালেও একইভাবে দেরিতে বর্ষার কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে দেখা গিয়েছিল।"
আরও পড়ুন : ভেঙে পড়তে পারে ক্লাসরুম! আতঙ্কে স্কুলেই যেতে ভয় হরিশ্চন্দ্রপুরের পড়ুয়াদের
তিনি বলেন, " সাধারণত পরিষ্কার অগভীর জলে ডেঙ্গির মশা জন্মায়। যে জায়গায় ৫ ফুটের কম জল রয়েছে সেখানেই এডিস মশা জন্মানোর আদৰ্শ স্থান। গভীর জলাশয়, পুকুর, নালা এলাকায় ডেঙ্গির মশা জন্মানোর সম্ভাবনা কম। অপেক্ষাকৃত পরিষ্কার জলে যেমন, পাত্রে জমে থাকা জল, গাছের কোটর, টব, ফেলে দেওয়া নারকেলের খোলা, মাটির ভাঁড়, প্লাস্টিকের খেলনায় বৃষ্টির জল জমে ডেঙ্গির মশার বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে।"
আরও পড়ুন : ট্রেনে চুরি গিয়েছিল মোবাইল! হাওড়া জিআরপি ‘এই’ ভাবে ফিরিয়ে দিল সেই সব হারানো ফোন
মশার কামড় থেকে রেহাই পেতে ঘরোয়া টোটকাও জানিয়েছেন গবেষকরা। গৌতমবাবু জানান, ডেঙ্গুর মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। তাই দিনের বেলায় কাজে বেরোনোর সময় যতটা সম্ভব শরীর ঢেকে রাখতে হবে। বিশেষ করে স্কুলের পড়ুয়াদের ফুলহাতা জামা, মোজা, জুতো ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গুর কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই সাবধানতা অবলম্বন করাই একমাত্র উপায়। তিনি বলেন, " নিম তেল ২ শতাংশ ও ৯৮ শতাংশ সরষের তেল মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে গায়ে মাখলে মশার কামড় থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া, ৯৪ শতাংশ নারকেল তেল ও ৬ শতাংশ নিম তেল দিয়েও মিশ্রণ তৈরি করা ব্যবহার করা যেতে পারে।"