জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সারদের ওয়ার্কআউট চ্যালেঞ্জ অনেক সময়ই তীব্র বা ইনটেন্স হয়। এমনকী কেউই তা সুপারভাইসও করেন না। আর সেই ট্রেন্ড অনুসরণ করলে মেনিসকাস ইনজুরি, লাম্বার ডিস্ক বালজেস এবং রোটেটর কাফ টিয়ারের মতো সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আর এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে ২১ বছর বয়সীদের মধ্যেও।
advertisement
ফিট এবং ক্যামেরার সামনে নিজের সুন্দর দেখানোর তাগিদ বাড়ছে। আর চোখ বুজে অনেকেই সেই সমস্ত ট্রেন্ড অনুসরণ করে চলেছেন। এতে শরীর সুস্থ তো হচ্ছেই না, বরং নিজের সৌন্দর্য প্রদর্শনের তাগিদটাই বেশি। অনলাইন এনগেজমেন্ট বাড়ানোর জন্যই আসলে এগুলি করা হয়। স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখা কিংবা সঠিক কৌশলের মৌলিক বিষয়গুলি এখানে উপেক্ষিত হয়ে থাকে।
এমনকী ওয়ার্ম-আপ এবং ধীরে ধীরে এক্সারসাইজ বাড়ানোর বিষয়গুলিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যালগরিদম সাধারণত আসক্তি বাড়াচ্ছে। এর ফলে অনেকেই নিজেদের শারীরিক সীমা না বুঝেই হাই-রিস্ক এক্সারসাইজ বারবার করে চলেছেন।
আরও পড়ুন: রেলস্টেশনের মাইক বন্ধ করতে ভুলে গেলেন মহিলা কর্মী! তারপর যা শোনা গেল…হাসতে হাসতে পেটে খিল সকলের
এক সময় যেখানে সুস্বাস্থ্যই মানুষের লক্ষ্য ছিল, সেখানে বর্তমানে সেটা শুধু লাইক আর ভিউয়ের গণ্ডিতে এসেই ঠেকেছে। নিজের অভ্যন্তরীণ সুস্থতার তুলনায় জনসমক্ষে নিজের ভাবমূর্তি রক্ষাই যেন এখন ফিটনেসের সংজ্ঞা হয়ে উঠেছে।
আমাদের দেশ এখন একটি অর্থোপেডিক বা অস্থি সংক্রান্ত সঙ্কটের প্রাথমিক লক্ষণ প্রত্যক্ষ করছে, যার মূলে রয়েছে শরীরের নিজের ভাবমূর্তি সংক্রান্ত উদ্বেগ এবং ডিজিটাল অনুকরণ। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এই প্রবণতাটিকে একটি নীরব মহামারী হিসেবে চিহ্নিত করছেন। সেই সঙ্গে গোটা প্ল্যাটফর্ম জুড়ে তাৎক্ষণিক সচেতনতা এবং আরও দায়িত্বশীল কন্টেন্টে তৈরির জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
বিখ্যাত অর্থোপেডিক সার্জেন তথা ওয়ার্ল্ড অর্থোপেডিক কনসার্ন ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ডা. অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “প্রত্যেকটা মানুষের শরীরের গঠন একে অপরের থেকে আলাদা এবং অনন্য। কারও কারও ক্ষেত্রে শারীরবৃত্তীয় ফারাক থাকে, তো অন্যদের জন্য থাকে মাসকিউলো-স্কেলেটাল সমস্যা। যা হবেই, এমনটা ভাবার কিন্তু কোনও কারণ নেই। আবার কারও কারও শরীরে কার্ডিয়াক এবং রেসপিরেটরি সমস্যা থাকে, যেগুলি ধরা পড়ে না। সেই কারণে তীব্র ব্যায়াম অথবা শারীরিক কসরত করতে গেলে পেশাদার কোচ, প্রশিক্ষিত ফিজিওথেরাপিস্ট এবং ডাক্তারদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। যাঁরা WhatsApp University বা হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শের উপর নির্ভর করেন, তাঁদের চোট পাওয়ার এবং বিপদের আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়।”