প্রশ্ন) স্কুল শুরু হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায়ও পড়ুয়াদের ক্লাস হচ্ছে, কতটা সতর্ক থাকতে হবে অভিভাবকদের?
উত্তর) এখানে অভিভাবকদের ভূমিকাটাই মুখ্য। বাচ্চাদের স্কুলে (School Reopens) দেওয়া এবং নেওয়া এই পুরো সময়টাতে তাঁদের অনেকগুলি সতর্কতা নিতে হবে। তাদের অবশ্যই একটা মাস্ক পরাতে হবে। সেই সেক্ষেত্রে মাস্কটি এন৯৫ মাস্ক না হলেও অন্তত সার্জিকাল থ্রি লেয়ার মাস্ক, সম্ভব হলে ডাবল লেয়ার মাস্ক দিতে হবে। কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার না করাই ভাল। বাচ্চার ব্যাগে অতিরিক্ত মাস্ক, সাবান ও স্যানিটাইজার দিতে হবে। বাচ্চাকে অবশ্যই বলে দিতে হবে তারা কোথাও হাত দিলে অবশ্যই হাত ধুয়ে নেয়। ক্লাসে মাস্ক পরে থাকলেও কিছুক্ষণ পর পর মাস্ক খুলে দু-তিনটে লম্বা শ্বাস নিয়ে আবার মাস্কটি পরে নিতে হবে। বাড়ি ফিরে এসেও মাস্ক খুলে অন্যান্য সতর্ক বিধি মানতে হবে। বাড়িতে বয়স্ক মানুষ থাকলে তাঁদের থেকে বাচ্চাদের একটু দূরে রাখাই ভাল। টিফিন স্কুলে ভাগ না করে খাওয়াই ভাল। স্কুলে কোনও বাচ্চার সর্দি কাশি হলে sotorko
advertisement
প্রশ্ন) পড়ুয়ারাই দীর্ঘদিন ঘরবন্দি ছিল। ফলে বাইরের জগতের সঙ্গে কোনও ভাবে কন্ট্যাক্টে আসেনি। এখন তারা বাইরে বেরলে কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কম থাকবে?
উত্তর) এটা বলা খুব মুশকিল। পরীক্ষা না করে জানা সম্ভব নয় সেটা। বিশেষত এখানে তো শুধুমাত্র যে কোনও রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতার কথা বলা হচ্ছে না এখানে বলা হচ্ছে কোভিড এন্টিবডি গঠনের কথা আর সেটা টেস্ট না করে বোঝা সম্ভব নয়। আর তাছাড়া এই দু-বছরে শিশু বা পড়ুয়ারা স্কুলে না এলেও মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছে, দুর্গাপূজা ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানেও মাঝে মধ্যেই বেরিয়েছে। তাই তারা যে একেবারেই ঘরবন্দি ছিল এমনটা কিন্তু বলা যায় না। অনেক ক্ষেত্রেই বাচ্চাদের উপসর্গহীন করোনা হয়ে থাকবে। তবে এরপরেও যদি দেখা যায় বাচ্চাদের জ্বর জারি হচ্ছে তবে অবশ্যই তাদের আইসোলেটেড করে, স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে হবে অভিভাবকদেরই এবং বাচ্চাদের বাড়িতে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন : করোনা সংক্রমণে এগিয়ে পুরুষরা, মহিলাদের রিপোর্ট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছে সমীক্ষা!
প্রশ্ন) কোনও বাড়তি সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা কি নিতে হবে?
উত্তর) মাঝে মাঝে একটু গার্গল করা, ঈষদুষ্ণ জল খাওয়া, একটু স্টিম ভেপার নেওয়া। ভালো সুষম খাদ্য খাওয়া। প্রতিদিনের খাবারে বাচ্চাদের পুষ্টি যেন থাকে সেরকম সুষম আহার তারা যাতে খায় সেটুকু নিশ্চিত করার একটা বড় দায়িত্বও রয়েছে অভিভাবকদের।
প্রশ্ন) ১৫ বছরের উর্দ্ধে ভ্যাকসিন হয়েছে, তবে তার থেকে ছোট যারা, তাদের প্রতি কতটা নজর রাখতে হবে?
উত্তর) যারা আরও ছোট তাদের যেমন কোভিড হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে তেমনই হলে তাদের আইসোলেটেড করে রাখাটাও কঠিন হয়ে পরে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চাদের অসুখ করলে বাবা-মায়ের বা উল্টোদিকে মা-বাবার কোভিড হলে ছোট বাচ্চাদের হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ উভয় পক্ষকেই দূরে রাখাটা শক্ত হয় ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে (School Reopens)। তাই বাড়িতে আইসোলেটেড রাখা না গেলেও বাড়িয়ে যেন সেটা বজায় রাখা হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।
প্রশ্ন) ঋতু পরিবর্তনেও বাচ্চাদের সর্দিজ্বর হয়। সর্দিকাশি হলেই কি ডাক্তার দেখাতে হবে?
উত্তর) এখনকার যে পরিস্থিতি অর্থাৎ করোনাভাইরাস গাইডলাইন মেনে অবশ্যই এই মুহূর্তে সর্দি কাশি হলে চিকিৎসকের (Back To School) (Back To School) একটা পরামর্শ নেওয়া ও একটা কোভিড টেস্ট করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এখন কোভিড টেস্ট সহজ হয়ে গিয়েছে। র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট এনে পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার। এবং চিকিৎসকের সংস্পর্শে থেকে তাঁদের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।
প্রশ্ন) টানা কয়েক ঘণ্টা ছোটরা মাস্ক পরে থাকলে কষ্ট হতে পারে, কোনও বিকল্প কি রয়েছে?
উত্তর) হ্যাঁ, নিশ্চই রয়েছে। টানা কয়েক ঘন্টা শুধু নয় একটানা ১৫ থেকে ২০ মিনিট মাস্ক পরে থাকলেও সমস্যা হতে পারে। এটি বিজ্ঞানসম্মত নয়। তাই এক্ষেত্রে বাচ্চারা মাস্ক খুলবে পনেরো কুড়ি মিনিট পর পর। আশেপাশে বন্ধুরা নেই এমন সময় বা বন্ধুরা থাকলেও মুখ ওপরের দিকে করে মাস্কটি খুলতে হবে। জোরে জোরে দু-তিনবার শ্বাস নিয়ে তারপরে আবার মাস্ক পরে নিতে হবে।
আরও পড়ুন : চোখের সৌন্দর্য বাড়াতে দেদার লাগাচ্ছেন কাজল? অজান্তেই করে ফেলছেন না তো বড় ক্ষতি!
প্রশ্ন) স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে কি করতে হবে?
উত্তর) স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে (Back To School) জামাকাপড় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ছেড়ে ফেলতে হবে। ছাড়া জামাকাপড় বা ইউনিফর্মটি রোদে ঝুলিয়ে রাখতে পারলে ভালো হয়। মাস্ক ফেলে দিতে হবে। হাত কুড়ি সেকেন্ড সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। দুপুরে বাড়ি ফিরলে একটু গরম জলে স্নান করতে হবে। সাবান দিয়ে স্নান করতে পারলে ভালো হয়। হাত-চোখ-মুখ ও শরীরে বাকি খোলা অঙ্গ ভালো করে ধুতে হবে স্নানের সময়। বাড়ির বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে বা খুব কাছে না যাওয়ায় ভালো। ক্লাসের কারও সর্দিকাশি হলে যেন নিজেকে আইসোলেটেড করেই রাখা হয়। অনেক সময় স্কুলে যাওয়ার উৎসাহে বাচ্চারা মৃদু উপসর্গ থাকলেও তা পরিবারের কাছে আড়াল করে। তেমনটা যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।