মুর্শিদাবাদে দর্শনীয় স্থানগুলির তালিকায় মধ্যে পর্যটকরা সবার আগে রাখেন হাজারদুয়ারি প্রাসাদকে। এই দুর্গপ্রাসাদ যেখানে অবস্থিত, সেই পুরো চত্বরটাকে বলে নিজামত কিলা বা কিলা নিজামত। হাজারদুয়ারি ছাড়াও ইমামবাড়া, ঘড়ি ঘর, মদিনা মসজিদ, চক মসজিদের মতো বেশ কিছু স্থাপত্য রয়েছে কিলা নিজামত এলাকায়। তবে সেগুলো দর্শনের জন্য এলেই হাজারদুয়ারীতে প্রয়োজন গাইডদের। তাই গাইড নেওয়ার বার্তা দিচ্ছেন গাইডরা। দু’বছর আগেই উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মধ্যে দিয়েই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় গাইডদের। সরকারি স্বীকৃত প্রাপ্ত ৫০জন গাইড আছেন হাজারদুয়ারী চত্বরে। তারা সমস্ত কিছুই পরিদর্শন করিয়ে দিয়ে বুঝিয়ে দেন পর্যটকদের।
advertisement
অনেকেই এসে হাজারদুয়ারিকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রাসাদ ভেবে ভুল করে থাকেন। অনেকেই ভাবেন হাজারদুয়ারি হল নবাবের বাসস্থান। কিন্তু হাজারদুয়ারি হল তৎকালীন বড়ো কুঠি। যেটা বোঝার জন্যই দরকার গাইডদের। তবেই জানা যাবে ইতিহাসের প্রকৃত তথ্য।
হাজারদুয়ারি মুলত নবাব নাজিম হুমায়ুন জা তৈরি করিয়েছিলেন। ১৮২৯ সালে তিনি এই প্রাসাদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। গোটা স্থাপত্যের রূপকার ছিলেন ডানকান ম্যাকলিওড। দেখলেই বোঝা যায়, এই প্রাসাদের স্থাপত্যশৈলী ইউরোপীয় ঘরানার, বিশেষ করে ইতালীয় রীতির সৌধগুলোর সঙ্গে মিল প্রচুর। ১৮৩৭ সালে মুর্শিদাবাদের প্রধান আকর্ষণ হাজারদুয়ারির নির্মাণকার্য শেষ হয়। ৪১ একর জায়গা নিয়ে এই প্রাসাদ দাঁড়িয়ে আছে। ১ হাজারটা দরজা আছে বলে এর নাম হাজারদুয়ারি। অবশ্য দরজাগুলির মধ্যে ১০০টাই নকল। তবে চট করে দেখে নকল দরজাগুলোকে চিহ্নিত করা বেশ মুশকিল। দেওয়ালের মধ্যে এমনভাবে ডিজাইন করা, বাইরে থেকে দেখলে হুবহু আসল দরজা মনে হবে। দুর্গপ্রাসাদে যদি হঠাৎ করে শত্রুরা আক্রমণ করে বসে, তাদের বিভ্রান্ত করার জন্যই নকল দরজাগুলো বানানো হয়েছিল। সাধারণভাবে প্রাসাদটি হাজারদুয়ারি নামে প্রচলিত হলেও, হুমায়ুন জা একে ‘বড়ো কুঠি’ নামেই ডাকতেন।





