রাখি বন্ধনের সময় ভাই দেন বোনকে প্রতিশ্রুতি। কিন্তু বাস্তবে এক বোন রক্ষা করলেন তাঁর ভাইকে। মহারাষ্ট্রের পুণা এলাকার ঘটনা। ২১ বছরের দিদি নিজের লিভার দান করে ১৭ বছরের ভাইকে ফিরিয়ে আনলেন মৃত্যুর মুখ থেকে।
জানা গিয়েছে, পুণার বাসিন্দা সন্তোষ পাতিল একটি বেসরকারি সংস্থায় নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী গৃহকর্ম সহায়িকার কাজ করেন। তাঁদের দুই সন্তান। বড় মেয়ে নন্দিনী এখন কলেজে পড়েন। ছেলে রাহুল দশম শ্রেণীর ছাত্র। কষ্ট করে ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে স্বনির্ভর করার লড়াই করছিলেন পাতিল দম্পতি। ঠিক তখনই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁদের। ক্রমাগত অসুস্থ হয়ে পড়ে রাহুল।
advertisement
নভি মুম্বইয়ের মেডিকভার হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয় তার। দেখা যায় রাহুলের অটোইমিউন লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। এই জন্য জরুরি ভিত্তিতে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। সাধারণত অটোইমিউন লিভার সিরোসিস প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে শুধু ওষুধ দিয়েই চিকিৎসা করা যেতে পারে। কিন্তু রাহুলের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করতে দেরি হয়েছে বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসক বিক্রম রাউত।
কিন্তু কে দেবেন লিভার! প্রাথমিক ভাবে মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু কিছু শারীরিক সমস্যা থাকার কারণে তিনি অঙ্গদানে সমর্থ্য নন বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই এগিয়ে আসেন রাহুলের ২১ বছরের দিদি নন্দিনী। তাঁকে ‘ফিট’ হিসেবে চিহ্নিতও করেন চিকিৎসকেরা। তবে চিকিৎসার খরচ সামলানো মুখের কথা ছিল না। সেক্ষেত্রে এগিয়ে আসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চলতি বছর ২৬ জুন সফল অস্ত্রোপচার করা হয় তাঁদের।
নন্দিনী বলেন, ‘আমার ভাই-ই আমার কাছে পৃথিবী। এই বছরের রাখি পূর্ণিমায় তাঁকে সবচেয়ে মূল্যবান উপহার দিতে পেরে আমি খুশি।’ বিনিময়ে এবার রাখি পূর্ণিমায় নন্দিনীর হাতে রাখি বাঁধবেন রাহুল।