সাধারণত কফ, হাঁচি, কাশি বা থুতু অর্থাৎ ড্রপলেটের মাধ্যমে ভাসমান কণাগুলি বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে আর আশেপাশের মানুষকে সংক্রমিত করে। কিন্তু মাস্ক পরলে এই ধরনের ক্ষতিকারক কণা থেকে রক্ষা পেতে পারেন মানুষজন। কারণ মাস্ক এই ভাইরাসগুলির প্রবেশ পথে বাধা দেয়। কিন্তু এখানেও একটা সমস্যা রয়েছে। সম্প্রতি ACS Applied Materials & Interfaces জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাইরাস প্রবেশ করতে না পারলেও মাস্কের উপরে বা পৃষ্ঠতলে যদি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াগুলি থেকে যায়, তা হলেও সেগুলি সংক্রামক হিসেবে কাজ করতে পারে। পরবর্তী সময়ে এতে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়।
advertisement
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা সেই সমস্যারই সমাধান দিচ্ছেন। সুতির কাপড়ের একটি মাস্ক তৈরি করেছেন তাঁরা। যেখান থেকে রি-অ্যাক্টিভ অক্সিজেন স্পিসিস (ROS) নির্গত হয়। তাই মাস্কটি যখন সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসে, তখন এর পৃষ্ঠতলে থাকা সমস্ত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা অণুজীবের মৃত্যু হয়। মাস্কটির সব চেয়ে বড় গুণ হল, এটি জল দিয়ে ধুয়ে নেওয়া যেতে পারে এবং পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়াও, নানা উপায়ে মাস্কটিকে ডিজ-ইনফেক্ট করা যায়। লাঞ্চের ফাঁকে মাস্কটি খুলে সূর্যালোকে রেখে দেওয়া যেতে পারে। অফিসে বা বাড়িতে কোনও আলোর সামনে দীর্ঘক্ষণ থাকলেও ডিজ-ইনফেকশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে পারে। গবেষকদের কথায়, এটি কমপক্ষে ১০ বার জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করা যায়, তার পরেও এর অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল অ্যাক্টিভিটি একই থাকে। সাত দিন পর্যন্ত একই রকম সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে এই মাস্ক।
কী ভাবে তৈরি হয়েছে এই মাস্ক? গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রথমে 2-diethylaminoethyl chloride (DEAE-Cl) দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এটি। তার পর এই মডিফায়েড কটনটিকে নেগেটিভ চার্জড ফোটোসেনসিটাইজারের সলিউশনে রঞ্জিত করা হয়েছে। তার পর দৃঢ় ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক ইন্টার-অ্যাকশানের জন্য এটিতে DEAE চেন সংযুক্ত করা হয়েছে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায়, সূর্যালোকের উপস্থিতিতে এক ঘণ্টায় ৯৯.৯ শতাংশ ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে এই মাস্ক।