লক্ষ্মী মহারাষ্ট্রের থানেতে ১৯৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন একজন পুরুষ হিসাবে। তিনি মুম্বইয়ের মিঠিবাঈ কলেজ (Mithibai College) থেকে কলা বিভাগে স্নাতক এবং ভরতনাট্যমে স্নাতকোত্তর লাভ করেন। বলিউডের পরিচালক এবং স্ক্রিপ্টরাইটার কেন ঘোষের (Ken Ghosh) সঙ্গে লক্ষ্মী বিভিন্ন ধরনের ডান্স ভিডিওতে কাজ করেছেন।
advertisement
২০০০ সালের প্রথম দিকে লক্ষ্মী ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের জন্য লড়াই শুরু করেন। ২০০২ সালে তাঁকে মুম্বইয়ের ডিএআই ওয়েলফেয়ার সোসাইটির (DAI Welfare Society) চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ করা হয়। ২০০৫ সালে মহারাষ্ট্রের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরআর পাটিল (RR Patil) সেখানকার সমস্ত বারের ওপর একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। মুম্বইয়ের সমস্ত পানশালায় বন্ধ করা হয় বার ডান্স। লক্ষ্মী এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। বার ডান্সারদের জীবিকার জন্য লক্ষ্মী তাঁদের হয়ে আওয়াজ তোলেন। এখান থেকেই একজন সমাজসেবী হিসাবে লক্ষ্মীর যাত্রা শুরু হয়।
২০০৭ সালে লক্ষ্মী ভারতের সেক্সুয়াল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য গড়ে তোলেন একটি নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন অস্তিবা (Astiva)। লক্ষ্মীর লম্বা লড়াইয়ের ফলে ২০১৪ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ট্রান্সজেন্ডারদের থার্ড জেন্ডার (Third Gender) হিসাবে বৈধতা দেয়। লক্ষ্মীর একরোখা প্রতিবাদ এবং প্রচেষ্টার ফলে ২০১৮ সালে আর্টিকেল ৩৭৭ (Article 377) ধারার অবলুপ্তির ঘটানো হয়।
লক্ষ্মী প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের জন্য। এর জন্য লক্ষ্মীকে কিন্নর আখাড়ার (Kinnar Akhara) প্রধান পদে নিযুক্ত হয়েছে। লক্ষ্মী বিভিন্ন ধরনের টিভি শো এবং ডকুমেন্টারি ফিল্মে কাজ করেছেন। ২০১২ সালে পাবলিশ হয় তাঁর লেখা অটোবায়োগ্রাফি মি হিজরা, মি লক্ষ্মী (Me Hijra, Me Laxmi)। ২০১১ সালে তিনি বিখ্যাত টিভি রিয়েলিটি শো বিগ বসে (Bigg Boss)অংশগ্রহণ করেন।
লক্ষ্মী দু'টি শিশুকে অ্যাডপ্ট করেছেন এবং ট্রান্সমেল বডিবিল্ডার আরিয়ান পাশাকে (Aryan Pasha) বিয়ে করেছেন। লক্ষ্মী নারায়ণ ত্রিপাঠী অনেক দিন ধরেই ট্রান্সজেন্ডারদের পরিষ্কার পানীয় জল, সেফ স্যানিটেশন এবং হাইজিনের জন্য কাজ করে চলেছেন। সারা দেশের নিরিখে এর জন্য News18 এবং হারপিক ইন্ডিয়ার (Harpic India) মিলিত প্রচেষ্টায় শুরু হয়েছে মিশন পানি মুভমেন্ট (Mission Paani Movement)। সকলের জন্য পরিষ্কার পানীয় জল এবং সেফ স্যানিটেশনের লক্ষ্যে শুরু করা হয়েছে এই প্রোগ্রাম। সন্দেহ নেই, লক্ষ্মীর অবদান এই জলযুদ্ধে প্রেরণা জোগাবে।