তবে প্রবাদে যতই বলা হোক না কেন, অধিকন্তু ন দোষায়, বাস্তব কিন্তু আলাদা। যেহেতু পুরুষের হাজার চুল কাটার রকমফের রয়েছে, তাই নিজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত চুলের ছাঁট বেছে নেওয়া বাস্তবে একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
পুরুষদের জন্য সেরা চুলের ছাঁটের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু আড়ম্বরপূর্ণ আর ট্রেন্ডি হেয়ারকাট। রয়েছে স্পাইক থেকে সাইড-পার্ট, যা চুলের ধরন এবং মুখের আকৃতি অনুসারে করা যেতেই পারে। কিন্তু এখানে কয়েকটা নতুন বছরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা কিছু চুলের ছাঁট উল্লেখ করা হল।
advertisement
মুলেট
এই ধরনের চুলের ছাঁটে চুল সামনের দিকে, উপরের দিকে এবং পাশে ছোট করে কাটা হয়, কিন্তু পিছনে লম্বা হয়। এটি ৮০-র দশকে, বিশেষ করে হিপ্পিদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় ছিল।
অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি অনুসারে, এই হেয়ারস্টাইলকে বর্ণনা করার জন্য মুলেট শব্দের ব্যবহার আমেরিকান হিপ-হপ ব্যান্ড ‘দ্য বিস্টি বয়েজ’ করেছিল। তাদের ১৯৯৪ সালের গান ‘মুলেট হেড’-এ এই ধরনের চুল কাটার একটি বর্ণনা দেওয়া ছিল: “পাশে এক নম্বর এবং পিছনে স্পর্শ করবেন না, শীর্ষে ছয় নম্বর এবং এটি (পিছনের দিকে) কাটবেন না, জ্যাক।”
অনেক ফ্যাশন ম্যাগাজিন ২০২০ সালকে ‘মুলেটের বছর’ বলে অভিহিত করেছিল। কোভিড লকডাউনে হেয়ার সেলুন বন্ধ থাকার জন্য এর জনপ্রিয়তা দারুন বৃদ্ধি পায়। মুলেট চুলের ছাঁটের কিশোর-কিশোরীরা এক সাক্ষাৎকারে আসলে এই রকম চুল কাটাকে একটি রসিকতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৯০ দশকের অনেক প্রবণতার মতো, মুলেট চুলের ছাঁট আবার মূলধারার চুলের স্টাইলগুলোতে ফিরে এসেছে। সর্বাধিক জনপ্রিয় হল মুলেট ফেইড। তবে ট্যাপার ফেডের বহুমুখী স্টাইল ক্লাসিক মুলেটকে আধুনিক করেছে, এবং এটিকে একটি পরিষ্কার চেহারা দিয়েছে।
কোঁকড়া চুলের ছাঁট
পুরুষদের জন্য কোঁকড়া চুলের ছাঁট ২০২৩ সালেও সমান ভাবে জাঁকিয়ে আসতে চলেছে। টিমোথি শ্যালামেটের তো এই চেহারাটা বেশ কিছুদিন ধরেই দেখিয়ে চলেছেন। তাঁর থেকে টিপস নেওয়াই যায়।
কোঁকড়ানো চুল মানে কোনও হেয়ার স্টাইল নেই, এই চিন্তা একদমই ভুল। কোঁকড়ানো চুল আসলে সেই ধরনের চুল, যার নিজস্ব স্টাইল আছে, নিজস্ব আবেদন আছে। অনায়াসেই কোঁকড়ানো চুলের অনেক রকমের স্টাইল করা যেতে পারে। এতে লুকেও আসবে বেশ খানিক পরিবর্তন। কোঁকড়া চুলে সহজেই গিঁট পড়লেও এই চুলের ধরনটিকে স্টাইলের জন্য নিখুঁত করে তোলে। কোঁকড়া চুল কোনও স্টাইল খুব ভাল ভাবে ধরে রাখে।
কোঁকড়ানো চুলের পুরুষরা সাধারণত তাঁদের চুল ছোট করতে প্রলুব্ধ হতে পারেন, তবে যখন তাঁরা তাঁদের কোঁকড়ানো চুলের দৈর্ঘ্য একটু বড় করেন, তখন এটা হঠাৎ করে তাঁদের চেহারা চোখটানা ভাবে রূপান্তরিত করে ফেলতে সক্ষম হন।
কোঁকড়া চুল হলিউডের অনেক পুরুষের নিজস্ব স্টাইল, ম্যাথিউ ম্যাককনাঘির স্বস্তিদায়ক তরঙ্গ থেকে ব্রুনো মার্সের ঢেউ খেলানো চুল- উদাহরণ কম নেই।
ফ্রন্ট ব্যাংস
এটি নতুন প্রজন্মের মধ্যে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে জনপ্রিয় হেয়ার স্টাইল। বেশিরভাগ পুরুষকেই এখন এই হেয়ার স্টাইলকে আপন করে নিতে দেখা যাচ্ছে।
যদি কেউ এখনও দ্বিধায় ভোগেন যে, ফ্রিঞ্জ ব্যাংস হেয়ার স্টাইল তাঁদের চেহারার সঙ্গে যাচ্ছে কি না, তাঁদের জন্য ফ্রন্ট ব্যাংস উপযুক্ত। আসলে এই হেয়ার স্টাইল এতই বহুমুখী যে যে কোনও ধরনের মুখের সঙ্গে বেশ মানানসই। পরিমার্জিত তো বটে,ই স্টাইল করার পরিসীমাও অফুরন্ত।
আরও পড়ুন: বরফঢাকা বর্ধমানে ঘুরছে পেঙ্গুইন, দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা! অবাক ছবি ঘুরছে নেটপাড়ায়
নিশ্চয়ই চিন্তা হচ্ছে, কী এই ফ্রন্ট ব্যাংস? যখন মাথার পাশের চুল ছোট করে কেটে চুলের সামনের আর উপরের অংশ লম্বা রেখে দেওয়া হয়, যাতে এটি কপালের উপর ঝুলিয়ে রাখা যায়, তাকে ফ্রিঞ্জ কাট বলা হয়।
আরও পড়ুন: 'ওঁর কথায় কেউ আস্থা রাখে? বিশ্বাস করে?', বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ, নিশানা করলেন কাকে?
ব্যাংস অবশ্য বিভিন্ন ধরনের হয়। তাই চুলের ধরন, গঠন এবং ব্যক্তিগত শৈলীর মতো বিষয়গুলি বিবেচনা করতে হবে চুলের ছাঁট নেওয়ার আগে। সাইড সুইপ্ট ব্যাংস হেয়ারস্টাইল বা সোজা চুলের স্টাইল বিবেচনা করলে চুল ২ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা হওয়া উচিত। সামনে থাকবে কোনাকুনি কাট আর পাশে যে কোনও ধরনের ফেড বা আন্ডার কাট। কোঁকড়া চুল হলে কেবল সামনের ব্যাংসগুলিকে অবাধে কপালে পড়তে দিতে হবে। আর আনুষ্ঠানিক পরিবেশের জন্য উপযুক্ত দেখাতে চাইলে চুলে কিছুটা ওয়াক্স বা জেল লাগাতে হবে, তাতে টেক্সচার-ওয়ালা ব্যাংস পাওয়া যাবে।
