এই দিনে উপবাস পালনেরও কিছু নিয়ম আছে। কিছু শিব ভক্ত নির্জলা উপবাস পালন করেন এবং কেউ ফল খান। এমন পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান গরমের পরিপ্রেক্ষিতে ডায়েটিশিয়ানের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাক কীভাবে নিজেকে সতেজ রাখা যায় । ডায়েটিশিয়ান ডা. প্রীতি শুক্লা বলেন, ‘‘উপবাসের সময় ফল ও জলের মিশ্রণ সঠিক রাখা উচিত, অর্থাৎ তৃষ্ণা পেলে জল খাওয়া উচিত এবং ক্ষুধার্ত থাকলে ফল খাওয়া উচিত, যাতে শরীর হালকা থাকে এবং আমরা যে খাবার খাই, তা হজম হয়।’’
advertisement
এছাড়াও প্লেটে ভিটামিন থাকা উচিত বলে জানাচ্ছেন তিনি। আসলে প্রায়ই লোকেরা উপবাস ভঙ্গ করার সময় কার্বোহাইড্রেট খায়, যেমন যবের আটার রুটি, সাবুদানা ইত্যাদি। এই সমস্ত কার্বোহাইড্রেটের কারণে আমরা কিছুক্ষণ পরে ক্লান্ত বোধ করতে পারি। অতএব, মনে রাখা দরকার যে আমাদের প্লেটে কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে সমান পরিমাণে ভিটামিন থাকা উচিত, যা শক্তি দেয়। শুকনো ফলও শক্তি জোগায়। চা-কফি পান এড়িয়ে চলাই ভাল, এগুলো শরীরে কিছু সময়ের জন্য স্বস্তি দেয়, তারপর দুর্বলতা শুরু হয়। তাই দই, পনির, বাটার মিল্কের সঙ্গে ফলও খেতে পারি আমরা। উপবাসের সময় সবজি খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। ফলের রস চিনি ছাড়াই পান করা উচিত।
আরও পড়ুন : মহা শিবরাত্রিতে করুন এই কাজ, দেবাদিদেবের আশীর্বাদে বাধা বিঘ্ন দূর হয়ে জীবনে আসবে অর্থবৃষ্টি ও সৌভাগ্য
গর্ভবতী মহিলাদের কিন্তু উপবাস রাখা উচিত নয়, কারণ তাঁদের কিছু সময় পর পর খাদ্য গ্রহণ আবশ্যক। এমতাবস্থায় যদি তাঁরা ব্রত করেন, তবে খাওয়ার ব্যাপারে যত্ন নেওয়া উচিত। তাঁদের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ভিটামিন এবং কার্বোহাইড্রেট অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনবার শুকনো ফল, ফল এবং পনির খাওয়া যায়। খুব বেশি মিষ্টি না খাওয়ার চেষ্টা করা উচিত, অন্যথায় বার বার ক্ষুধার্ত অনুভব করবেন তাঁরা এবং দুর্বলও বোধ করবেন।
ডায়াবেটিস ও রক্তচাপের রোগীদেরও উপবাস রাখার সময়ে নিজের যত্ন নেওয়া উচিত। ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা না বাড়ে। একই সঙ্গে উপোস রাখার আগে রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ক্ষুধার্ত থাকার ফলে চিনির মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা শরীরের ক্ষতি করতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের উপোস থাকলে প্রচুর জল পান করা উচিত। যার কারণে শরীর থেকে টক্সিন বের হওয়ার পাশাপাশি শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং দুর্বলতার অনুভূতিও কমে।
এছাড়া সময়মতো ওষুধ তো খেতেই হবে। ডায়াবেটিকরা পানীয় জলের পাশাপাশি বাটার মিল্ক ও লেবু জলও খেতে পারেন। ফাইবার সমৃদ্ধ ফল খাওয়া ভাল। এতে ক্ষতি হয় না। ফলের রস পান করলে ক্ষতি হবে। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। কেন না, অনেক ফলের হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে।