লন্ডনের কিংস কলেজের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর প্রতি পাঁচ জনে এক জন টিনিটাসে ভুগছেন। যদিও কিছু লোকের ক্ষেত্রে এই শব্দ কয়েক দিন স্থায়ী হয়েছিল। কিন্তু বাকিরা কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস ধরে টিনিটাসে ভুগেছেন। দ্য ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টার এবং ম্যানচেস্টার বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টার দ্বারা পরিচালিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কোভিড আক্রান্তের ৭.৬ শতাংশের শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে, টিনিটাসে ভুগছেন ১৪.৮ শতাংশ এবং ৭.২ শতাংশ মানুষ রোটাটরি ভার্টিগোতে আক্রান্ত। টেক্সাসের লামার ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার পর টিনিটাসের প্রকোপ ৮ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির মেজাজ, ঘুম এবং মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটছে।
advertisement
আরও পড়ুন: কন্ডিশনার হোক বা ফেস মাস্ক, গরমে সব সমস্যার সমাধান নারকেলের জল! কীভাবে?
স্ট্রেস এবং টিনিটাস: বেশ কিছু ভাইরাল সংক্রমণে কানের ক্ষতি হয়। কানের ভিতরে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে। ফলে কানে জলাভাবের সম্ভাবনা থাকে। তবে মানসিক উদ্বেগ টিনিটাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। ২০২০ সালের একটি গবেষণায় এমনই দেখা গিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, হতাশা, বিরক্তি, আর্থিক অবস্থা নিয়ে চাপের কারণে টিনিটাসের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
যন্ত্রণাদায়ক শব্দ থেকে পরিত্রাণের উপায়: করোনা থেকে সেরে ওঠার পর যদি কেউ টিনিটাসে আক্রান্ত হন তবে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। শোনার সমস্যা এবং টিনিটাস একসঙ্গে থাকলে শ্রবণযন্ত্র লাগালে পরিত্রাণ মিলতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরি।
এছাড়া আরও কয়েকটি উপায় রয়েছে। নিচু লয়ের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যেমন কোনও প্রাকৃতিক শব্দ বা পাখা কিংবা হালকা করে রেডিও চালিয়ে রাখলে মস্তিষ্ক টিনিটাসের পরিবর্তে সেই শব্দে মনোযোগ দিতে চাইবে। এতে কিছুটা আরাম মিলবে। যেহেতু টিনিটাসের অন্যতম কারণ চাপ বা উদ্বেগ তাই ধ্যান, যোগাসনের অভ্যাস করলে মন শান্ত হবে। টিনিটাসের প্রভাব কমাতে প্রোগ্রেসিভ মাসল এক্সারসাইজও খুব কাজে দেয়। এর পাশাপাশি শুতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার নির্দিষ্ট সময় বজায় রাখা জরুরি। পুষ্টিকর খাবার এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এককথায় বিশ্রাম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা মেনে চললেই অনেকটা উপকার মিলবে।